ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করবেন কিভাবে?
ডায়বেটিস-পিসিওএস-ফ্যাটি লিভার থেকে সুস্থ হতে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের বেনিফিটস নিয়ে কথা বলছি বেশ কিছুদিন যাবত।
কেউ কেউ প্রশ্ন করছেন, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করবেন কিভাবে।
ওকে, গুড কোশ্চেন।
প্রথম করনীয় কাজ হচ্ছে, কোন সময় থেকে কোন সময় আপনার পক্ষে আসলে না খেয়ে থাকা সম্ভব, সেটা খুজে বের করা।
ধরেন আজকে আপনি আমার পোস্ট দেখে ইন্টারমিটেন্ট শুরু করলেন, তারপর কালকে অফিস করার সময় মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন।
এটা কি ঘটতে পারে?? খুব স্বাভাবিকভাবেই ঘটতে পারে।
এজন্য, আমি যেটা বলি সবাইকে, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করার সময় অবশ্যই আপনার ইটিং উইন্ডো আর ফাস্টিং উইন্ডো নিজে থেকে সিলেক্ট করবেন, অন্য কাউকে সিলেক্ট করতে দেবেন না। কারন আপনার জীবনটা অন্য কেউ যাপন করে না।
আগে একটু বলে নেই, সবার হয়তো জানার কথা না, বিভিন্ন ধরনের ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং আছে।
১৪ঃ১০
১৫ঃ৯
১৬ঃ৮
১৮ঃ৬
২০ঃ৪
২৪ঃ২৪
২৪ঃ১২
৩০ঃ১২
৩২ঃ১৬
৩৬ঃ২৪
৪৮ঃ২৪ (শুনে ভয় পেতে পারেন) এই গুলো সবই বিভিন্ন ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংএর ফাস্টিং আর ইটিং উইন্ডো।
যাদের এখনো কোন মেজর মেডিক্যাল ইস্যুজ নাই, তারা ১৪ঃ১০-১৬ঃ৮ করলেই ইনাফ, সপ্তাহে তিনদিন করলেই হবে, দেখবেন ফ্যাটি লিভার বা ভিসেরাল ফ্যাট আপনার শরীরে জায়গা পাবে না সহজে।
এখন কিভাবে করবেন, সেদিকে আসি।
প্রথম ইস্যু-হাইড্রেশনঃ পানিশুন্যতায় ভোগা যাবে না। তাই বিটুইন দ্যা মিলস, যথেষ্ট পানি খেতে হবে।
দ্বিতীয় ইস্যুঃ মিনারেলাইজেশানঃ বিশেষভাবে সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম, প্লাস কার্বনেট-ফসফেটের ব্যালেন্স মেইনটেইন করে যাওয়া। সোডিয়াম-পটাসিয়াম-ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতিতে আপনার ব্লাড প্রেসার লেভেলের বারোটা বাজবে, হার্টবিট লাগামছাড়া হওয়ার ভয় থাকবে। ফাস্টিং চলাকালে তাই যথেষ্ট মিনারেল, ইভেন কিছুক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মিনারেল নিতে হবে।
তৃতীয় ইস্যুঃম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টস। আপনার ক্যালরি ডেফিসিটে থাকার দরকার আছে কিনা, নিউট্রিশনিস্টের সাথে কথা বলে নেবেন। অনেকক্ষেত্রেই ক্যালরি ডেফিসিটে থাকার আসলে দরকারই থাকে না।
চতুর্থ ইস্যুঃ মিল ডিস্ট্রিবিউশন। আপনি সাহরী না খেয়ে বাজে ভাবে রোযা রাখতে চেষ্টা করবেন না, সেটা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং হবে না। ডায়েট আর ইবাদতকে গুলায়ে ফেলবেন না দয়া করে। অবশ্যই রাতে/ভোরে খাবেন এবং সেটা হবে একটা হেভি মিল। আপনার কাজ করার জন্য শক্তির প্রয়োজন আছে। পাশাপাশি ফাস্ট ব্রেক করার পর যে মিলটা নেবেন সেটা যেন আপনাকে কাহিল না করে।
লাস্টঃ ফ্যাট খাওয়া। কি ধরনের ফ্যাট খাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে আপনার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের ফল কি হবে। সাধারনের জন্য আমি প্রেফার করবো, ৫০% স্যাচুরেটেড, ২০% মনো আনস্যাচুরেটেড এবং ৩০% পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট খেতে। তবে, ব্যক্তিভেদে এটা ভিন্ন হতে পারে।
এই বিষয়গুলি নিয়ে ভাবলে আপনি বুঝতে পারবেন ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং আপনার জন্য কেমন হতে পারে।
সতর্কতাঃ ইনসুলিন নিচ্ছেন এমন রোগীরা বা ব্লাড প্রেসার-হার্ট ডিজিজের সমস্যা আছে এমন রোগীরা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং একা একা করবেন না।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং একজন মানুষের পুরো জীবনকেই বদলে দিতে পারে যদি আপনি সঠিকভাবে করতে পারেন।