এই ছবিতে ভাত থাকলেও আজকে ৩২ দিন ধরে আমি আছি ভাত ছাড়াই
প্রথমে ১৫ ঘন্টা, এরপর ১৮ ঘন্টা, এরপর ২০ ঘন্টা পার করে এখন শুরু করেছি ২৪ ঘন্টা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং+কিটো ডায়েট। এত দ্রুত ২৪ ঘন্টায় যাওয়া সবার পক্ষে সম্ভব না। আমি যেমন খুশি তেমন করো করছি না বরঞ্চ নিজের অনেকগুলি বিষয়ে ক্লিনিক্যাল এসেসমেন্ট করে এরপর নিজের ডায়েট প্ল্যান-ওয়ার্ক আউট প্ল্যান বানিয়ে এরপরই ডায়েট শুরু করেছি। কিটো সবাইকে স্যুট করে না তাই প্রফেশনালের পরামর্শ ছাড়া কিটো করবেন না।
প্রথম ৭ দিন খুব কঠিন সময় গেছে, কারন আমি এর আগে কিছুদিন যাবত ব্যাপকভাবে চিনি খাচ্ছিলাম, আর তেহারী-কাচ্চি তো আমার সারাজীবনের সঙ্গী। অনেকেই জানেন না, আমি মাসে কমপক্ষে ২০ বার তেহারী খাই গত দশ বছর যাবত। এরমধ্যে ২০১৬-১৮ সালে অনেক মাস গেছে একমাসেই ৩৫-৫০ বার তেহারী/কাচ্চি খাওয়া হয়েছে। শুধু কাচ্চি/তেহারী খাওয়ার জন্য ছাত্রজীবনে একটা এক্সট্রা টিউশনি করতাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হওয়ায় যেহেতু টিউশনি থেকে বেশ ভালই আয় হত, প্রচুর কাচ্চি খাওয়া তখন কোন সমস্যাই ছিল না।
কিন্তু এতে যেটা হয়েছে, আমার শরীরের চর্বি নিয়ন্ত্রনে আমাকে প্রায়ই খুব বেগ পেতে হত। ফিজিক্যাল হার্ডওয়ার্ক+প্রচুর হাটার(দিনে ২০ হাজার স্টেপ এভারেজ) পরেও শরীরে বেশ চর্বি ছিল।
কক্সবাজার যাওয়ার পর আড়াই বছরে এই চর্বিগুলো সব ঝরে যায় রেগুলার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করার ফলে। যখন চাকরি ছেড়ে ঢাকায় ফিরি, আমি তখন নিজেকে পালকের মত হালকা ফিল করছিলাম।
কিন্তু ঢাকা আসার পর আবার শুরু হয় ভাত আর কাচ্চি-তেহারী।
২০২১ ও ২০২২ সালের শুরুর ছয় মাসে আমার কোমরের মাপ বাড়ে প্রায় ৫ ইঞ্চি।
গত মাসের ১৫ তারিখ থেকে তাই শুরু করি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং+কিটো।
আমার কিটো করতে একগাদা খাবার লাগে। এত খাবার ম্যানেজ করাও ঝামেলা। আম্মু অসুস্থ মানুষ+নন কো অপারেটিভ, তাই এক প্যাশেন্ট আপুর হেল্প নিলাম।
শুরুতে উনি ছাড়া কেউই আমাকে সহযোগিতা করেন নাই। কয়েকদিন পর আম্মুও কো অপারেট করতে শুরু করলেন।
এক মাসে কোমরের মাপ কমেছে পুরো ২ ইঞ্চি, ওজন কত কমেছে জানি না। ১২ দিন আগে দেখেছিলাম ৩.৫ কেজি কমেছে। পরে এত ব্যস্ত হয়ে পড়ি যে ওজন মাপার আর সময় পাই নি, গত পরশু চেম্বারে ওজন মাপাবার কথা ছিল, কিন্তু দশ ঘন্টার মধ্যে একটুও ফ্রি না থাকায় ওজন মাপা হয় নি। তবে আমার ধারনা ২১ তারিখ নাগাদ যখন মেপে দেখবো, ৭৫ কেজির নিচে চলে যাবে ওজন, ইনশা আল্লাহ।
প্রায় সব শার্ট ঢিল হয়ে গেছে, প্যান্টগুলিও বেশ ফ্লেক্সিবল লাগছে।
আমি এই প্রোগ্রাম চালিয়ে যাবো নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ইনশা আল্লাহ। এরপর ধীরে ধীরে একটা প্যালিওতে চলে যাবো। প্যালিও চলবে একেবারে এপ্রিল-রোযার ঈদের আগ পর্যন্ত।
এই মাসের ৩১ তারিখ থেকে ৩৬ ঘন্টার মঙ্ক ফাস্টিং শুরুর পরিকল্পনা আছে, কিন্তু চেম্বার করে তা করা সম্ভব হবে বলে মনে করি না। আল্লাহ ভরসা, চেষ্টা করে দেখবো।
নভেম্বরের শেষ নাগাদ ২৩ঃ১/১৫ঃ৯ ঘন্টায় ব্যাক করবো ইনশা আল্লাহ।একদিন ২৩ ঘন্টা ফাস্টিং, পরের দিন ১৫ ঘন্টা।
আমি মনে করি, ফিটনেসের মত দামী জিনিস আসলে পৃথিবীতে খুব কমই আছে। খুব বেশি খারাপ অবস্থায় যাওয়ার আগেই আমাদের ফিটনেসে হাত দেয়া উচিত। পুরুষদের প্রতি বছরই অন্তত ৩ মাস ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং+১ মাস রমযানের রোযা রাখার অভ্যাস থাকা উচিত।
আজকে ২৪ ঘন্টা ফাস্টিং করে কিছুটা স্ট্রেন্থ ট্রেইনিং করলাম।
হাতে সময় থাকলে ভাল করে কার্ডিও করতে পারতাম, চেষ্টা করছি সময় বের করার।
ডিসেম্বর আসার আগেই শরীরের অধিকাংশ অনাকাঙ্ক্ষিত চর্বি ঝরিয়ে ফেলবো ইনশা আল্লাহ।