কনিকা আপুর হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সি প্রটোকলের সফলতার গল্প
৫ ফিট ১ ইঞ্চি উচ্চতায় ৬২ কেজি ওজন নিয়ে কনিকা আপু প্রথম আমাদের কাছে আসেন। মূলত ওবিসিটি এবং ৭-৮ বছরের পুরানো পিসিওএসের সমস্যা এবং বর্তমান প্রেগন্যান্সি মেইনটেইনেন্স এর জন্য তিনি আমাদের কাছে আসেন। এসময় তিনি ১৬ সপ্তাহের প্রেগনেন্ট ছিলেন এবং তার ৭ মাস বয়সী একটা বেবিও ছিলো।
এছাড়াও তিনি আমাদের জানান তার সিভিয়ার হেয়ার ফল, দূর্বলতা, ঘুমের সমস্যা, বমি এবং শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা ছিলো।
যেহেতু এর আগে আপুর দুই দুইবার মিসক্যারেজের হিস্ট্রি ছিলো এবং একই সাথে তিনি ওভারওয়েট & পিসিওএসের প্যাশেন্ট, তাই আমাদের লক্ষ্য ছিলো প্রেগন্যান্সিতে তার জেস্টেশনাল ডায়বেটিস, ওজন নিয়ন্ত্রন, প্রিএক্লাম্পসিয়া/পোস্ট পার্টাম এক্লাম্পশিয়া প্রতিরোধ করে তাকে আল্লাহর ইচ্ছায় তাকে একটা নিরাপদ মাতৃত্ব উপহার দেওয়া।
প্রথমবার ওনাকে আমরা ১৪ ঘন্টার ফাস্টিং এর সাথে ১৮০০ ক্যালোরির একটা ডায়েট প্ল্যান দেই। ২৩ সপ্তাহ’’র সময় সেকেন্ড ফলো আপে এসে তিনি আমাদের জানান তার দূর্বলতা, বমিভাব অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু তার ওজন এসময় ৩ কেজি বেড়ে যায়! যেহেতু তিনি ওভারওয়েট ছিলেন এবং হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সি ছিলো তাই তার ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখাটা ছিলো আমাদের মূল লক্ষ্য।
সেকেন্ড ফলো আপ এবং থার্ড ফলো আপে আপুকে ক্রমান্বয়ে আমরা লো কার্ব ডায়েটের সাথে ১৪ ঘন্টা এবং ১৬ ঘন্টার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং দিলাম।
শেষ পর্যন্ত ৩৬ সপ্তাহে আপুর ওজন ছিলো ৭২ কেজি এবং ৩৮ সপ্তাহে একই ওজন নিয়ে আল্লাহর অশেষ রহমতে বিশেষ কোন সমস্যা ছাড়াই সি-সেকশনের মাধ্যমে একটি সুস্থ ছেলে শিশু প্রসব করেন।
বাংলাদেশে বাড়তি ওজনের মায়েদের একেবারেই কমন একটা সমস্যা হল প্রেগন্যান্সিতে জেস্টেশনাল ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়া, পরবর্তীতে যাদের অনেকেরই প্রিএক্ল্যাম্পশিয়া ও এক্ল্যাম্পশিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
আলহামদুলিল্লাহ কনিকা আপুর এগুলোর কোনটাই হয় নি।
আমাদের হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সি প্রোটোকলের উদ্দেশ্যও এটা, মায়েদের সব ধরনের জটিলতা থেকে রক্ষা করে সুস্থ শিশুর জন্মদান।