Top

কিছুদিন ডায়েট-এক্সারসাইজের পর ওজন একজায়গায় এসে আটকে যায়? জানুন করণীয়।

Sajal’s Diet Falsafa / Diet and Macro Nutrients  / কিছুদিন ডায়েট-এক্সারসাইজের পর ওজন একজায়গায় এসে আটকে যায়? জানুন করণীয়।

কিছুদিন ডায়েট-এক্সারসাইজের পর ওজন একজায়গায় এসে আটকে যায়? জানুন করণীয়।

কিছুদিন ডায়েট-এক্সারসাইজের একটা রুটিনে থাকার পর ওজন একটা জায়গায় এসে আটকে যায়।

এই ব্যাপারটাকে বলা হয় বডি ওয়েট থার্মোস্ট্যাট। আমাদের ওজন ঠিক কত হবে এটা মূলত ঠিক করে আমাদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস। হাইপোথ্যালামাস এই সিদ্ধান্ত নেয় আমাদের শরীরের গঠন, পরিবেশ, খাবার ও শারীরিক-মানসিক কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে।(1)

ধরেন আপনি ২২০০ ক্যালরি খান রোজ। আগামী সপ্তাহে আপনি ১৭০০ ক্যালরি এবং তার পরের সপ্তাহে ১৪০০ ক্যালরি খাওয়া শুরু করলেন। ৮ সপ্তাহ ১৪০০ তে থাকার পর আপনি ১২০০ ক্যালরিতে চলে গেলেন। ১০-১২ সপ্তাহ ১২০০ ক্যালরি খাওয়ার পরে দেখবেন এত কম খেয়েও আপনার ওজন কমছে না। একটা জায়গায় আটকে গেছে।

লো ক্যালরি ডায়েটে শরীর মাসল মাস হারায়, ওয়াটার ওয়েট হারায় এবং সেই সাথে ফ্যাটও হারায়। কিন্তু যেহেতু শরীর মাসল হারায়, মেটাবলিক রেট কমতে থাকে। সময় যতই যায়, মেটাবলিজম ততই স্লো হয়। ফলে খাওয়া কমাতে কমাতে একটা লেভেকে গিয়ে আর কোন কাজ হয় না।(2)

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করতে গেলেও এই একই সমস্যা হয়, কিন্তু ফাস্টিং করলে মাসলের চেয়ে বেশি ফ্যাট লস হয়, ওয়াটার তো লস হয়ই। ১৬ ঘন্টার ফাস্টিং খুবই ধীরে কাজ করে, ১৮ ঘন্টার ফাস্টিং মোটামুটি দ্রুত, ২৪ ঘন্টার ফাস্টিং বেশ দ্রুত কাজ করে।

কিন্তু যত যা কিছুই করেন, একই ধরনের ডায়েট এবং ওয়ার্ক আউট কিছুদিন পর একটা জায়গার বাইরে আপনাকে আর এগিয়ে নিতে পারবে না।

এখন আমি তো আসলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অসুস্থ মানুষদের নিয়ে কাজ করি, এজন্য আমাকে ২০-২৪-৩৬-৪৮ ঘন্টার ফাস্টিং পর্যন্ত প্যাশেন্টদের নিয়ে যেতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ২৪ ঘন্টায় চলে গেলেই প্যাশেন্টদের ক্লিনিক্যাল অবজেক্টিভ অর্জন করা হয়ে যায়। তখন ধীরে ধীরে আমি প্যাশেন্টদের ডিসচার্জ করে দেই বা ছুটি দিয়ে দেই। কারো কারো এতে হয় না, ৩৬ ইভেন ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত যেতে হয়।

জাস্ট এজ ওয়েট লিফটিং, আপনি প্রথমে ১২ কেজি তুলছেন, এরপর ১৫-১৮-২০-২৪-৪৮, এভাবে।

তবে কার কতদুর গেলে কাজ হবে এটা ক্লিনিশিয়ানকে সম্পুর্ন নিজ জ্ঞান থেকে তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

সর্বশেষ, ডায়েটের প্যাটার্ন কিভাবে চেঞ্জ হবে সেটা সাধারনের ক্ষেত্রে একরকম, অসুস্থদের ক্ষেত্রে একরকম। সাধারন মানুষ যার শুধু ওজনটাই কমাতে হবে, তাদের কার্ব কমিয়ে ক্যালরিক ব্যালেন্স করলেই সাধারনত আউটপুট আসে।

অসুস্থদের, বিশেষ করে যাদের ডিজেনারেশান/হরমোনাল ইমব্যালেন্স আছে, তাদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ডায়েট সাইক্লিং করতে হয় আর এই সিদ্ধান্তটা আমাকে নিতে হয় মাত্র কয়েক মিনিটের ভেতরে।

সাধারন মোটামুটি সুস্থ কেউ ফাস্টিং করতে চাইলে ১৬ ঘন্টা থেকে শুরু করে ২৪ ঘন্টায় গেলেই যথেষ্ট। অসুস্থদের ডায়েট আসলে শুরুই হয় ২০ ঘন্টার পর থেকে, যাকে বলা হয় থেরাপিউটিক ফাস্টিং। কিন্তু চট করে কেউ ২০ ঘন্টা ফাস্টিং শুরু করতে পারে না, সেক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বুঝে তাকে ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই করনীয়।

Share
admin