Top

কিটোজেনিক ডায়েট কী?

Sajal’s Diet Falsafa / Diabetes  / কিটোজেনিক ডায়েট কী?

কিটোজেনিক ডায়েট কী?

কিটোজেনিক ডায়েট হচ্ছে একধরনের ভেরি লো কার্বোহাইড্রেট ও হাই ফ্যাট ডায়েট। এতে মোট ক্যালরির ৭৫+% ফ্যাট, ২০% প্রোটিন ও ৫% কার্বোহাইড্রেট থাকে।

কিটো ডায়েট কাদের করা উচিত??

মূলত ওবিসিটি-ফ্যাটি লিভার ও পিসিওএস প্যাশেন্টদের করা উচিত। ডায়বেটিক ও হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত প্যাশেন্টদের জন্যও কিটো খুবই কার্যকর কিন্তু দক্ষ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্টের হেল্প ছাড়া এটা অবশ্যই ডায়বেটিক-কার্ডিয়াক প্যাশেন্টরা করবেন না। কিডনী রোগীদের জন্য কিটো ডায়েট বেশ ঝুকিপূর্ণ হতে পারে, তাই এড়িয়ে চলাই উত্তম। এর মানে আবার এটা না যে কিটো করলে কিডনীতে সমস্যা হয়।

কিটোসিস কি?

কিটোসিস হচ্ছে শরীরের এমন একটা অবস্থা যখন শরীর গ্লুকোজের বদলে অন্য ধরনের ফুয়েল দিয়ে চলে। অনেকটা গ্যাসের বদলে পেট্রোলে গাড়ি চালাবার মতন, আপনি জ্বালানির ধরন বদলাচ্ছেন। নরমালি আমাদের শরীর চলে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ দিয়ে, কিটোতে আমাদের শরীর চলে বিটা হাইড্রক্সিবিউটাইরেট ও এসিটোএসিটেট নামের দুটো মলিকিউলকে পুড়িয়ে। এই মলিকিউলগুলি তৈরি হয় ফ্যাট অক্সিডেশনের মাধ্যমে মানে চর্বি ভেঙ্গে।(1)

কিটোসিস তিন ধরনের হয়।

১) নিউট্রিশনাল কিটোসিস-এটা ডায়েট থেকে হয়

২) এক্সারসাইজ কিটোসিস-এটা হাই ইন্টেন্সিটি ইন্টারভাল ট্রেইনিং করলে হয়।

৩) স্টারভেশন কিটোসিস-লম্বা সময় না খেয়ে থাকলে বা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করলে হয়।

কিটোসিস আর কিটোএসিডোসিস কিন্তু সম্পুর্ন ভিন্ন জিনিস।

ডায়বেটিক কিটোএসিডোসিস হচ্ছে যখন রোগীর শরীর চাইলেও যথেষ্ট পরিমান ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। তখন রক্তে থাকা সুগার আমাদের কোষে প্রবেশ করতে পারে না। তাই লিভার ফ্যাট ভেঙ্গে কিটোন তৈরি শুরু করে যেন আমরা বেচে থাকতে পারি। এই অবস্থায় অত্যন্ত দ্রুতগতিতে রক্তে কিটোন বডিজ তৈরি হয় এবং এই অবস্থায় রক্তে একই সাথে বাড়তি সুগার ও কিটোন্স ঘুরে বেড়ায়। এটা একটা লাইফ থ্রেটেনিং কন্ডিশন, অনেক মানুষ এই অবস্থায় মারা যান।

ডায়বেটিক কিটোএসিডোসিস আর নিউট্রিশনাল কিটোসিস কোথায় আলাদা?

একটা ওয়েল ডিজাইন্ড কিটোজেনিক ডায়েট প্ল্যানে ব্লাডে কিটোনের লেভেল 0.5 mM থেকে 2.0 mM এবং এক্সারসাইজ চলাকালীন অবস্থায় সর্বোচ্চ 5.0 mM এবং ফাস্টিং চলাকালে 5.0-8.5 mM পর্যন্ত যেতে পারে। পক্ষান্তরে এসময় রক্তে গ্লুকাগন ও IGF-1 লেভেল উচ্চমাত্রায় থাকে।(2)

ডায়বেটিক কিটোএসিডোসিস হলে রক্তে কিটোনের মাত্রা 20.0 mM পার হয়ে যায়।

এছাড়াও, নিউট্রিশনাল কিটোসিসের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে রক্তে একটা বেসলাইন ইনসুলিন থ্রেশোল্ড মেইনটেইন হয়, এবং গ্লুকোজ লেভেলও বাড়ার সুযোগ থাকে না, যে কারনে ডায়বেটিক কিটোএসিডোসিস একটা সুপরিকল্পিত প্ল্যানে হওয়া সম্ভব না।

DKA এবং এধরনের কমপ্লিকেশান থেকে বাচতে ডায়বেটিক রোগীদের কিটো শুরুর আগে মেটাবলিক এডাপ্টেশন ও টেস্টিং করা উচিত।

কিটোজেনিক ডায়েটের পক্ষে ও বিপক্ষে অনেক ভুল ধারনা চালু আছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রোগীরা।

আগামীতে পেইজে ও ইউটিউব চ্যানেলে আমরা ধারাবাহিকভাবে কিটোজেনিক ডায়েটের সত্য-মিথ্যা ও খুটিনাটি তুলে ধরবো আমেরিকান নিউট্রিশন এসোসিয়েশান, ডায়েট ডক্টর, আমেরিকান ডায়বেটিক এসোসিয়েশানসহ বিশ্বসেরা স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা ও বিজ্ঞানী-পুষ্টিবিদ-চিকিৎসকদের বক্তব্য।

Share
admin