Top

গলব্লাডার বা পিত্তথলি ফেলে দেয়ার পর ডায়েট কেমন হবে?

Sajal’s Diet Falsafa / Diet and Macro Nutrients  / গলব্লাডার বা পিত্তথলি ফেলে দেয়ার পর ডায়েট কেমন হবে?

গলব্লাডার বা পিত্তথলি ফেলে দেয়ার পর ডায়েট কেমন হবে?

গলব্লাডার বা পিত্তথলি ফেলে দেয়ার পর ডায়েট কেমন হবে অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।

সাধারনত, গল ব্লাডার ফেলে দেয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীর তার একটা প্রধানতম ইমালসিফাইং অর্গান হারায়, যার কাজ হচ্ছে আমরা যে ফ্যাট খাই, সেগুলিকে হজমের উপযুক্ত আকারে নিয়ে আসা। পাশাপাশি, ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন সংশ্লেষন করা, নিয়মিত শরীরের এসিড-বেইসের ভারসাম্য রক্ষা করা (যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ) করা এবং প্রোটিন সংশ্লেষণে সহায়তা করাও গলব্লাডারের কয়েকটা কাজ। আমাদের বেশ কিছু স্টেরয়েড হরমোন উৎপাদনে গলব্লাডার থেকে উৎপন্ন হয়।(1)

গলব্লাডার ফেলে দেয়ার পর অনেকে ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া সম্পুর্ন বাদ দিয়ে দেন। এটা একেবারেই অনুচিত এবং বিজ্ঞানসম্মত না। গলব্লাডার ফেলে দেয়ার পরেও আপনার শরীর বাইল উৎপন্ন করতে পারে কারন বাইল জিনিসটা লিভারে উৎপন্ন হয়, ফলে ফ্যাটকে প্রসেস করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়।(2)

আপনি ফ্যাট খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। দ্রুত বার্ধক্যের ছাপ দেখা দিতে পারে শরীরে, এছাড়া আপনি হারাতে পারেন স্বাভাবিক উপায়ে ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন উৎপাদনের সামর্থ্য। আপনার যৌনক্ষমতা এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই কমে যেতে পারে।

আবার, গলব্লাডার ফেলে দেয়ার পর আপনি যদি যখন তখন ফ্যাট খেতে থাকেন বা এমন ধরনের খাবার খান যার ফলে লিভার অতিরিক্ত ডি নোভো লাইপোজেনেসিস করে, অথবা ইনফ্ল্যামেশান ঘটায় এমন খাবার যদি খান, তাহলে আপনার বেশ কিছু সমস্যা হবে।

প্রথম সমস্যা হবে, ব্লোটিং বা পেটে বাড়তি গ্যাস হয়ে ফুলে থাকা।

দ্বিতীয়ত, আপনার ডায়রিয়া হতে পারে।

তৃতীয়ত, মাঝেমাঝে দেখা দিতে পারে কন্সটিপেশান

চতুর্থত, কাধে এবং পেটের ডানদিকে ব্যথা হতে পারে

পঞ্চম ও সর্বশেষ, আপনার দীর্ঘমেয়াদে কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। গলব্লাডার রিমুভালের ২০ বছরের মধ্যে কোলনের ডানদিকে ক্যান্সার ধরা পড়ার সম্ভাবনা একেবারে কম নয়।

এছাড়াও ওজন কমে যাওয়া, যখন তখন মাথাব্যথা হওয়া, প্যানক্রিয়াটাইটিস হওয়া এগুলিও গলস্টোন রিমুভাল পরবর্তী সমস্যা।

এখন এই সমস্যাগুলি প্রতিরোধের উপায় কি??

১) একসাথে বেশি ফ্যাট জাতীয় খাবার না খাওয়া, বরং ফ্যাট জাতীয় খাবার সমানভাবে সারাদিনের ডায়েটে ভাগ করে দেয়া

২) শরীরে যেন বাড়তি ফ্যাট তৈরি না হয় তা নিশ্চিত করা। এজন্য চিনিজাতীয় খাবার এবং সাদা রঙের শর্করা এড়িয়ে চলতে হবে

৩) একদিন পর একদিন সকালে এক টেবিল চামচ এপল সিডার ভিনেগার, কিছুটা লেবুর রস ও এক চা চামচ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।

৪) দিনে মোট ক্যালরিতে ফ্যাটের পরিমান ৩৫-৪০% এর মধ্যে রাখা

৫) তৈলাক্ত মাছ-বাদাম নিয়মিত খাবারের তালিকায় রাখা

৬) সয়াবিন-সানফ্লাওয়ার অয়েল বা এজাতীয় হেভিলি রিফাইন্ড অয়েল থেকে দূরে থাকা।

৭) শাকসবজি, বিশেষ করে মাটির ওপরে হওয়া প্রচুর পানিসমৃদ্ধ সবজি বেশি খাওয়া

৮) প্রয়োজনে প্রফেশনাল নিউট্রিশনিস্টের পরামর্শ নিয়ে বাইল সল্ট ও মিল্ক থিসল ব্যবহার করা

৯) ফ্যাটি লিভার বা প্যানক্রিয়াটাইটিস থাকলে তার সঠিক চিকিৎসা করানো

এই অভ্যাসগুলো করলে গলব্লাডার ফেলে দেয়ার পরেও সুস্থ থাকবেন ইনশা আল্লাহ।

Share
admin