ছেলে-মেয়েদের পায়ের জোর বাড়াতে করণীয়
একটা মানুষের শরীর কেমন হবে তা অনেকটাই নির্ভর করে জীবনের প্রথম ১৬টা বছরের ওপর।
প্যাশেন্ট দেখার সময় মেয়ের মা হিস্ট্রি বলে যাচ্ছেন, মেয়ে পায়ে জোর পায় না। হাটতে পারে না, কোন কাজ করতে চায় না। পড়াশোনায়ও মন নাই, সারাদিনই দুর্বল অনুভব করে আর প্রচন্ড অলস।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, মেয়েকে খেলাধুলা করতে দিয়েছেন ছোট বেলা থেকে কখনো??
উত্তরঃ না।
কোন প্রকার ইনডোর গেমসঃ
উঃ না।
হাইকিং- বা দূরে হেটে হেটে ঘুরতে যাওয়া জাতীয় কোন এক্টিভিটি??
উঃ না।
নাচ বা জিমে তো সম্ভবত নেয়া হয় নি কখনো??
উঃ জ্বি না।
মেয়েকে কোন কোন কাজে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত রেখেছেন??
উঃ পড়াশোনা, আর্ট। আর সারাদিন মোবাইল তো আছেই।
আমি মেয়েটার পায়ের কাফ মাসলে হাত দিলাম। বয়স মাত্র ১৭ বছর৷ ইন্টারে উঠেছে এই বছর। She virtually have no muscle in her calfs. হ্যামস শক্ত করতে বলে জোরে চাপ দিলাম। হ্যামস পানি ভরা থলের মত নরম।
এই পানি কোত্থেকে আসে আমি বলছি।
আমরা যখন লম্বা সময় ধরে সুগার রিচ, হাই কার্ব, লো ফাইবার, লো মাইক্রোমিনারেল ডায়েটে থাকি, আমাদের শরীর ওয়াটার রিটেইন করতে থাকে।
সিম্পল উদাহরন দিচ্ছি।
আপনার প্রেসার কমে গেলে অনেক সময় গ্লুকোজ খেতে বলা হয়। গ্লুকোজ-স্টার্চের ইমিডিয়েট ইমপ্যাক্ট ব্লাড প্রেসারকে গ্লাইকোটিক স্ট্যাবিলাইজেশান তো করেই, সাথে গ্লাইকোজেন হিসেবে গড়ে প্রতি ১ গ্রাম গ্লুকোজ ৩ থেকে ৪ গ্রাম পানি ধরে রাখে শরীরে। এর সাথে যদি সোডিয়াম রিচ প্রসেসড ফুড (ফাস্ট ফুড এবং বিভিন্ন কোম্প্যানি মেইড ফুড) যুক্ত হয় তাহলে তো কথাই নেই।
একটা মানুষের শরীর কেমন হবে তা অনেকটাই নির্ভর করে জীবনের প্রথম ১৬টা বছরের ওপর।
এই মেয়েটা এবং তার মত আরো অনেক ছেলেমেয়ে আমাদের চারপাশে আছে যারা জীবনে কখনো হেলদি মাসল তৈরির কোন সুযোগ পায় নাই। খেলা হচ্ছে বাংলাদেশের বাবামায়েদের কাছে সময় নষ্ট।
ছেলেমেয়েদের পায়ের জোর বাড়াতে চাইলে,
১) সুগার ফ্রি খাবার খাওয়ান
২) কাধে-দু হাতে মাঝারি রকম ভারী ওজন দিয়ে সিড়িতে ওঠানামার অভ্যাস করান
৩) দড়ি লাফ, বক্স জাম্পের অভ্যাস করান
৪) দৌড়ানোর অভ্যাস করান
৫) প্রথমে স্বল্প থেকে ধীরে ধীরে লম্বা দুরত্ব(৪-২০ কিলোমিটার) হাটার অভ্যাস করান
৬) এনিম্যাল প্রোটিন ও গ্রীন-রেড কালার্ড ভেজিটেবল বাড়িয়ে খাওয়ান
৭) ভিটামিন বি ওয়ান, জিংক, ভিটামিন ডি ও ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খাবার এবং প্রয়োজনে প্রফেশনাল কনসাল্ট্যান্টের মত অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট(যদি অসুস্থ হয়ে যায় এই মেয়েটার মত) খাওয়ান।
গেম খেলা-মুভি দেখা বাচ্চাদের দূরে রাখতে চেষ্টা করুন।