ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে মূল লক্ষ্য কী হওয়া উচিত?
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনের সময় মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বডি ফ্যাট পার্সেন্টেজ কমানো এবং মাসল বিল্ডিং করা।
ইনসুলিন নিয়েও টাইপ টু ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে না থাকা একটা খুবই পরিচিত ঘটনা, কিন্তু ঘটনাটা আসলে স্বাভাবিক না।
ডাক্তারের দেয়া ডোজ অনুযায়ী ইনসুলিন নেয়ার পরেও রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক না হলে সাধারনত ইনসুলিন ডোজ আরো বাড়ানো হয়, যা আসলে আপাতদৃষ্টিতে কিছু সুফল নিয়ে আসলেও অতি শীঘ্রই পরবর্তী বিপদের কারনে পরিনত হয়।
রক্তে ঘোরাফেরা করা বাড়তি গ্লুকোজ জোর করে লিভারে এবং সেখান থেকে কোষের ভেতরে পাঠানোর ফল হয়, যেসব কোষে গ্লুকোজ জমার কথা না সেখানে গ্লুকোজ জমে, যেসব কোষে ফ্যাট জমার কথা না সেসব কোষে ফ্যাট জমে। এর শেষ পরিনতি গিয়ে দাঁড়ায় হার্ট এটাক/স্ট্রোক। যখন শরীরের অন্যান্য জায়গায় ফ্যাট জমানোর যাবতীয় সুযোগ সীমত হয়ে আসে কেবল তখনই শরীর হৃদপিন্ড ও মস্তিষ্কের মত অঙ্গের রক্তবাহিকাতে বাড়তি চর্বি জমানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
যেহেতু বাংলাদেশের মানুষের বডিফ্রেম ছোট এবং লিন মাস কম, খুব সহজেই আমাদের ক্ষেত্রে এই ঘটনাগুলো ঘটার সুযোগ থাকে।
এধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার একমাত্র উপায়, ফ্যাট লস। ওয়েট লস কথাটা ক্লিশে হয়ে গেছে, এখন সময় স্পেসিফিক ক্লিনিক্যাল ইন্টারভেনশনের, আর সেটা হচ্ছে ফ্যাট লস।
লম্বা সময় ধরে ইনসুলিন ডিপেন্ডেন্ট যারা, তাদের ফ্যাট লস নিয়ে সারাবিশ্বে অজস্র গবেষনা হয়েছে। খুজলে এত বেশি রিসার্চ পেপার পাওয়া যাবে যে কয়েক বছর পড়েও সেগুলো শেষ করা যাবে না। সমস্ত ক্ষেত্রেই মূল বক্তব্য হল, ফ্যাট লস ইনসুলিন সেন্সিটিভিটি বাড়ায়।
অর্থাৎ আজকে ৩৫% বডি ফ্যাট নিয়ে যিনি দিনে ৫০ ইউনিট ইনসুলিন নিচ্ছেন, তিনি ৩০% বডি ফ্যাটে চলে আসলে অপেক্ষাকৃত কম ইনসুলিন নিয়েও তার ব্লাড গ্লুকোজ কন্ট্রোলে থাকবে।
পুরুষদের বডি ফ্যাট পার্সেন্টেজ ২০% এর নিচে এবং নারীদের ২৭% এর নিচে চলে আসার পর অনেকক্ষেত্রেই ইন্সুলিন রেজিস্ট্যান্স রিভার্সের মত ঘটনা ঘটে, অথবা অন্তত ধারাবাহিকভাবে ইনসুলিন ছাড়াই ব্লাড গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রনে থাকে।
তাই, ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনের সময় মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বডি ফ্যাট পার্সেন্টেজ কমানো এবং মাসল বিল্ডিং করা।
ডায়বেটিস হওয়া মানে সব শেষ হয়ে যাওয়া না। আপনি চাইলেই নতুন করে আবার শুরু করতে পারেন।