ডায়বেটিস হলে মাথায় হাত নয় প্রয়োজন সঠিক উপায়ে ডাক্তারের পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্টের পরামর্শ মেনে চলা
হেনা আন্টি আমাদের কাছে প্রথম এসেছিলেন ২০২৩ সালের মার্চ মাসে। আন্টি যখন আমাদের কাছে প্রথম আসেন তখন তার টাইপ-২ ডায়বেটিস এবং হাইপারটেনশনের সমস্যা ছিল। ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য তাকে প্রতিদিন ওষুধ খেতে হত। ওষুধ মিস হলেই তার ডায়াবেটিস মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যেত এবং নানা জটিলতা দেখা দিত। শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ছিল ব্যাথা ও ইনফ্লামেশন, সাথে ছিল অতিরিক্ত ওজন ও শারীরিক দুর্বলতা। আমাদের তখন মূল লক্ষ্য ছিল তার টাইপ-২ ডায়বেটিস ও হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে আনা এবং ১০ কেজি ওজন কমানো।
আন্টিকে আমরা ১৬ ঘন্টার ফাস্টিং এর একটি ডায়েট প্ল্যান দেই। আলহামদুলিল্লাহ আন্টির প্রথম এক মাসেই ডায়েট ফলো করে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তিনি ডাক্তারের সাথে কথা বলে ডায়বেটিসের মেডিসিন বন্ধ করে দেন।
২ মাস পর নেক্সট ফলোআপে আন্টির হাইপারটেনশনও অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে, হাড়ের জয়েন্ট পেইন অনেকটা কমে যায়।
এরপর আমরা শুরু করি ডায়বেটিস থেকে পুরোপুরি সুস্থ হবার প্রচেষ্টা। এজন্য আন্টিকে আবার ১৮ ঘন্টা ফাস্টিং ডায়েট এবং দুই মাস পর ২০ ঘন্টা ফাস্টিং এর আরেকটি ডায়েট দেয়া হয়।
এভাবে ৬ মাস যাওয়ার পর আন্টির Homa IR বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স রেফারেন্স ভ্যালুর মধ্যে চলে আসে, তখন আমরা আন্টিকে পরীক্ষামূলক ভাবে দিনে ১৮০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট(টোটাল ডেইলি ইনটেকের প্রায় ৩৫%) খেতে দিই। তিন মাস পর দেখা যায় আন্টির HbA1C স্বাভাবিক। আলহামদুলিল্লাহ।
টেকনিক্যালি আমরা বলতে পারি আন্টির এখন টাইপ-২ ডায়বেটিস রিভার্স হয়ে গেছে। আন্টির হাড়ের জয়েন্টে যে ব্যথা ছিল তা থেকেও তিনি এখন সুস্থ। ওজন কমে ৬২ কেজি থেকে ৫১ কেজিতে এসেছে এবং ওনার ইমিউন সিস্টেম আগের থেকে অনেকটা ভালো হয়েছে, শারীরিক দুর্বলতা নেই। আন্টি বর্তমানে একজন স্বাভাবিক রোগমুক্ত মানুষের মতো জীবন যাপন করছেন। গত ২১ তারিখ আমরা একটা ডিসচার্জ ডায়েট দিয়ে আন্টিকে রিলিজ দিয়েছি।
ডায়বেটিস হলে মাথায় হাত দিয়ে বসে না পড়ে, সঠিক উপায়ে ডাক্তারের পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্টের অধীনে থেকে নিজের যত্ন নিলে টাইপ টু ডায়বেটিসও রিভার্স হয়।