ডায়েট ও লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমেই পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম থেকে সম্পুর্ন সুস্থ হওয়া সম্ভব
আমার অত্যন্ত পছন্দের একজন প্যাশেন্ট, নেত্রকোনা মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের একজন ছাত্রী যে কিনা ওভারিয়ান সিস্টে আক্রান্ত ছিল, তার লেইটেস্ট ডায়গন্সটিক টেস্টের রিপোর্ট এটা।
সে গত মে মাসে শুরু করে, যখন তার প্রচুর সুগার ক্রেইভিং ছিল, সারাক্ষনই ক্ষুধা লাগতো এবং সে কোনভাবেই ওজন কমাতে পারছিল না। যদিও তখন তার ওজন ৬৭ কেজির কাছাকাছি ছিল, আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম যে ৫৫ কেজির আশেপাশে চলে আসলে তার সিস্ট সেরে উঠবে।
প্রথমে সে সপ্তাহে ৩ দিন ১৮+ ঘন্টা ফাস্টিং করে, এরপর ২৪ ঘন্টা ফাস্টিংয়ে চলে যায়। তাকে বেশ কিছু ডায়েট সাইকেল দেয়া হয় টার্গেটেড হরমোন ব্যালেন্সিং থেরাপিউটিক ইন্টারভেনশন হিসেবে। প্রথম তিনটা ডায়েট সাইকেলই সে খুবই সাবধানে ফলো করে প্রায় শতভাগ এক্সিকিউট করে। তার বাবা তার ওপর বেশ ক্ষুদ্ধ হলেও সে ডায়েট চালিয়ে যায়।
অগাস্ট নাগাদ তার পরীক্ষাকেন্দ্রিক একটা প্যানিক এটাক-প্যালপিটেশান হওয়ার পর সে প্রায় হাল ছেড়ে দিচ্ছিল, ডাক্তারও তাকে ডায়েট বাদ দেবে কিনা সেব্যাপারে ভাবতে বলেন। তো আমি তাকে বলি, ডায়েট তার প্যানিক এটাকের সমস্যা কমাতেও সহযোগিতা করবে। আবারও ডায়েট সাইকেল চেঞ্জ করে দেই।
শেষপর্যন্ত সেপ্টেম্বরে আমি তাকে বলি, তার এখন সুস্থ হয়ে ওঠার সময় হয়ে উঠেছে। বুধবার সে চেম্বারে এসে আমার সাথে দেখা করে যায়।
আমি মুগ্ধতার সাথে এই অধ্যবসায়ী মেয়েটার নীরব পরিশ্রমের ফল দেখলাম। হাইপারইনসুলিনেমিয়া নেই, তাই পেটেও চর্বি নেই। পিরিয়ড হচ্ছে প্রতিমাসেই নিয়মিত, কোন পিল ছাড়া। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স পুরোপুরি রিভার্স হয়ে গেছে, রেফারেন্স ভ্যালুর চেয়ে সামান্য কমে যাওয়ায় তাকে ফাস্টিং ছেড়ে দিতে বলেছিলাম আগের সাইকেলে। সিস্টগুলো এখন ক্ষয় হয়ে একদমই ছোট ছোট টুকরোয় পরিনত হয়েছে, ইনশা আল্লাহ পরের ১-২টা সাইকেলে সেটাও ভাল হয়ে যাবে।
ভিটামিন ডি লেভেল দেখে তো আমি আরো অবাক, আমি জীবনে যে কয়েকজন হাতেগোনা মেয়ের অপটিমাম ভিটামিন ডি লেভেল পেয়েছি, সে তাদের একজন। ছেলেদের ভিটামিন ডি লেভেলও সাধারনত এত ভাল হয় না।
অধ্যবসায় আর সঠিক পরামর্শ এভাবেই একটা মানুষকে বদলে দেয় যদি আল্লাহ চান, আলহামদুলিল্লাহ।
পিসিওসের প্রধান আন্ডারলায়িং রিজন ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ও ইস্ট্রোজেন ডোমিন্যান্স বলে মনে করা হয়।
ডায়েট ও লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমেই পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম থেকে সম্পুর্ন সুস্থ হওয়া সম্ভব। সেটা টিপিক্যাল লো ক্যালরি-লো ফ্যাট ডায়েটে নয়, টার্গেটেড হরমোন ব্যালেন্সিং থেরাপিউটিক ডায়েটের মাধ্যমে।