নাজমা আপুর অতিরিক্ত ওজন, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, হরমোনাল ইমব্যালেন্স রিভার্সিং জার্নি
গত ১০ জানুয়ারী নাজমা আক্তার প্রথম আমাদের চেম্বারে আসেন তার অতিরিক্ত ওজন, স্ট্রং ইন্সুলিন রেজিস্টেন্স নিয়ে। তার উচ্চতা ৫’২” আর ওজন ছিলো ৭৫.৪৫ কেজি। তখন ওনার ইন্সুলিন রেজিস্টেন্স ছিলো ৩.৬৫। এছাড়াও তার কাজে মনোযোগ কম ছিলো, কিছুতে ফোকাস করতে পারতো না, গুরুতর নিউরোপ্যাথি, শরীরে ও মাথায় অনেক ব্যাথা হতো। অত্যাধিক মুড সুইং ও ব্রেইন ফগ ছিলো, সামান্য কাজেই হাপিয়ে যেতেন, ঘুম থেকে উঠার পর অতিরিক্ত ক্লান্ত লাগতো। তার অবস্থা এতোটাই খারাপ ছিলো যে মেন্সট্রুয়াল সাইকেল শুরুর আগে তার নানা ধরনের সুইসাইডাল চিন্তা ভাবনা চলে আসতো। নিউট্রিশনাল এসেসমেন্ট শেষে বোঝা গেলো তার শরীরে ভিটামিন-ডি ছিল কম, ঠিকভাবে তৈরি হচ্ছিল না এস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন ও থাইরয়েড হরমোন, ইনফ্লামেশনের মাত্রা ছিল তীব্র।
মিস নাজমার সব সমস্যা শুনে তাকে আমরা ২ মাসের জন্য ১৮ ঘন্টার একটি লো-কার্ব ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ডায়েট দেই। ডায়েট শুরুর ১০ দিন পরেই উনি তার মাঝে পরিবর্তন দেখতে পান।
আলহামদুলিল্লাহ মার্চে ফলোআপে এসে উনি জানায় তার মুড সুইং কমে গেছে, শরীর ও মাথার ব্যথা কমেছে, নিউরোপ্যাথির লক্ষণগুলো অনেকটাই কমে গেছে, বেলি ফ্যাট কমেছে ৯ ইঞ্চি, ESR কমে ২৩ এ এসেছে। এস্ট্রোজেন, প্রজেস্টোরন লেভেল বেশ খানিকটা বেড়েছে আগের চেয়ে। কিন্তু তিনি এখনো সামান্য কিছু সমস্যা ফেস করছিলেন। তার বারবার ঠান্ডা লাগছিলো আর অনেক চুল পড়ছিলো।
তাকে আবারো আমরা ২ মাসের জন্য ১৮ ঘন্টার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ডায়েট দেই সাথে প্রয়োজনীয় কিছু সাপ্লিমেন্ট নিতে বলি।
ইনশাআল্লাহ পরবর্তী ফলোআপ পর্যন্ত বাকি সমস্যা গুলোও সমাধান হয়ে তিনি সুস্থতার দিকে এগিয়ে যাবেন। আমরা তার সার্বিক সুস্থতা কামনা করছি।
নাজমার প্রধান সমস্যা ছিল তার দেহে অতিরিক্ত ইনসুলিন ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের উপস্থিতি। এটি তার থাইরয়েডকে স্লো করে দিয়েছিল এবং এস্ট্রোজেন-প্রজেস্টেরন মেটাবলিজম বাধাগ্রস্ত করে দিচ্ছিল। একারনেই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করে ইনসুলিন লেভেল কমানোর পর দ্রুত তিনি বেলি ফ্যাট কমিয়েছেন। সবার পক্ষে এত দ্রুত বেলি ফ্যাট কমানো সম্ভব নাও হতে পারে।
এক্ষেত্রে, ধারাবাহিকতাই সমাধান।