পর্বতারোহীদের জন্য কি ধরনের নিউট্রিয়েন্ট বেশি প্রয়োজন হয়?
ট্রেকিং মূলত একটা মিডিয়াম ইন্টেন্সিটি কার্ডিও, যেখানে প্রায়ই মাঝে মাঝে ভাল পরিমান শারীরিক শক্তি স্বল্প সময়ের জন্য খাটানোর প্রয়োজন পড়ে।
ট্রেকিং সাধারনত প্রতিদিন ৮-১২ ঘন্টা বা ক্ষেত্র বিশেষে ১৬-২০ ঘন্টাও টানা করা হয়। এই পোস্টে আমি ট্রেকারদের কি ধরনের নিউট্রিয়েন্ট ব্যবহার করতে হয় তা নিয়ে কথা বলবো।
১) পটাসিয়াম-ম্যাগনেসিয়ামঃ এই দুটো নিউট্রিয়েন্ট হচ্ছে একদম প্রাইমারী। কারন ট্র্যাকিং করলে খুবই স্বাভাবিক ঘটনা হল আপনার শরীর ঘামবে, আপনি সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম হারাবেন। এখন ক্যালসিয়াম ঘামের মাধ্যমে লস হয় আসলে খুবই সীমিত। কিন্তু এনার্জি মেটাবলিজমে ম্যাগনেসিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা থাকে, যেকারনে আপনার দেহকোষের মাইটোকন্ড্রিয়া ধারাবাহিকভাবে ম্যাগনেসিয়াম ব্যবহার করে ফেলে। পানির অভাবের সাথে সাথে ম্যাগনেসিয়াম-পটাসিয়ামের দ্রুত খরচ মিলেই মূলত ট্রেকারদের মাসল ক্র্যাম্পের সমস্যা শুরু হয়। এজন্য, ট্রেকারদের প্রতি দিন ১০০০-১২০০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম এবং ৬৫০০-৮০০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম প্রয়োজন।
ম্যাগনেসিয়ামের সোর্স হিসেবে কাঠবাদাম, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, চিয়া সিডস ট্রেকিং করার সময় কাজে লাগবে। পটাসিয়াম সোর্স হিসেবে চিয়া সিড, কলা, খেজুর, কিশমিশ ভাল কাজে দেবে।
কিন্তু এগুলো আপনার প্রয়োজনীয় ডোজ দিতে সক্ষম হবে না, তাই আগে থেকে শরীরে যথেষ্ট ম্যাগনেসিয়াম/পটাসিয়াম যাদের নেই, তারা চ্যালেঞ্জ বোধ করতে পারেন। ট্রেকাররা ক্র্যাম্প এড়াতে চাইলে লাইফ এক্সটেনশন ম্যাগনেসিয়াম বা লাইফ এক্সটেনশন ম্যাগনেসিয়াম পটাসিয়াম এক্সটেন্ডেড রিলিজ সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করতে পারেন। দিনে দুটো ৫০০ মিলিগ্রাম, ট্র্যাকিংয়ের শুরুতে এবং ট্র্যাকিং শেষ হবার ২-৩ ঘন্টা আগে নেবেন।
২) ভিটামিন ডি ও জিংকঃ ভিটামিন ডি আমাদের মাসল পাওয়ারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটো নিউট্রিয়েন্টের একটা। ইফ দেয়াএ ইজ নো ভিটামিন ডি, দেয়ার ইজ নো মাসল পাওয়ার। আমি স্ট্রেন্থ আর পাওয়ার আলাদা করে বলছি। ভিটামিন ডি এনশিওর করে আপনি একটা স্বল্প সময়ের তীব্র শক্তির কাজে নিজের মাসলকে দ্রুত এবং জোরে ফায়ার করতে পারবেন। এখানে সেকেন্ড ম্যান হল জিংক। আমার কাছে এথলিটরা এসে পারফরম্যান্স বাড়াতে চাইলে আমি সবসময়ই জিংক প্রেফার করি। জিংকও কিন্তু ঘামে বেরিয়ে যায়, বিশেষভাবে পুরুষদের ঘামে।
ট্রেকিং চলাকালীন সময়ে জিংকের ডোজ হবে পুরুষদের জন্য দিনে ৪০ মিলিগ্রাম এবং নারীদের জন্য ২০ মিলিগ্রাম, তবে যথেষ্ট মাছ আর রেড মিট পেলে এই ডোজ দরকার হবে না। আর ভিটামিন ডি ট্রেকিংয়ের সাতদিন আগে থেকে মেগাডোজ শুরু করা উচিত। ছেলেরা নেবেন প্রতিদিন ৪০ হাজার আইইউ, মেয়েরা নেবেন ৬০ হাজার আইইউ। ট্রেকিং শেষে এই ডোজ দিনে ৪ হাজারে নামিয়ে আনবেন এক সপ্তাহের জন্য, এরপর দিনে ২ হাজার যথেষ্ট হবে।
৩) বি ভিটামিন্সঃ ট্রেকিংয়ে বি ভিটামিন্সের মধ্যে আপনার দরকার হবে মূলত বি-১ এবং বি-৬। বি-১ দিনে ১০০ এমজি ব্যবহার করতে পারেন ট্রেক করার সময়, বি-৬ ব্যবহার না করলেও পারেন যদি যথেষ্ট মুরগীর গোশত আপনি খান।
আমি একটা সময় এক্সট্রিম ট্রেকিং করেছি বান্দরবানের গহীনে। এখন সময় সুযোগ হয় না, হলে আবার সেই বন্ধুদের সাথে পাওয়া যায় না।
ট্রেকিং শরীর ও মনের জন্য খুবই ভাল। যাদের সুযোগ আছে, তাদের উচিত বছরে ৩-৪ বার ট্রেকিং করা প্রতিবার অন্তত ৩ দিনের জন্য।
Happy Trekking!!