Top

প্যাশেন্টস ডায়েরি: পর্ব – ১০

Sajal’s Diet Falsafa / Patient Diary  / প্যাশেন্টস ডায়েরি: পর্ব – ১০

প্যাশেন্টস ডায়েরি: পর্ব – ১০

মহসিন সাহেব আমার কাছে এলেন একটা ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে, যা নিয়ে বেশিরভাগ মানুষ যায় সাইকোলজিস্টের কাছে।

কি ব্যাপার??

ব্যাপার হচ্ছে বউ ওনাকে গুরুত্ব দেন না। হাসি তামাশা করেন ওনার শারীরিক শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে। উনিও বউকে বেশ খানিকটা ভয়ই পান।

এই সমস্যার সমাধান হিসেবে আমি যা বললাম অনেকেরই হয়তো তা পছন্দ হবে না, কিন্তু বায়োলজির লোকজন জানে, এইটা কাজ করে।

প্রকৃতিতে নারী প্রানীরা পুরুষ প্রানীদের সম্মান করে কিছু ক্ষমতার কারনে।

পুরুষদের প্রতিরক্ষার ক্ষমতা, শিকার ধরার ক্ষমতা, যৌন ক্ষমতা এবং চারপাশ সম্পর্কে জ্ঞানের কারনে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করার ক্ষমতা, এই পাচ ক্ষমতা হচ্ছে পুরুষ প্রানীদের জন্য নারীর কাছ থেকে সম্মান পাবার মূল হাতিয়ার। এই ৫টা ক্ষমতা অর্জন করলে কোন নারী আপনাকে হয়তো পছন্দ নাও করতে পারে কিন্তু শ্রদ্ধা-সম্মান করবে।

মহসিন সাহেবকে জিজ্ঞেস করলাম, বাসার ভারী কাজে কখনো অংশগ্রহন করেন??

উত্তর এল, না।

স্ত্রী যেসব কাজে আটকে যান, থেমে যান, সেসবে অংশ নেন কখনো??

উত্তর এল, না।

স্ত্রীর চোখে যা অসম্ভব মনে হয়, সেসব কাজ কখনো তাকে করে দেখান??

না।

তাকে কখনো কোলে নিয়েছেন??

না।

কাধে??

না।

শারীরিক সম্পর্কে আপনার স্থায়িত্ব কতক্ষন??

১.৫-২ মিনিটের কাছাকাছি।

ইরেক্টাইল ডিজফাংশন হয়??

মাঝে মাঝেই হয়।

মানসিক চাপের অধিকাংশ সময়ে স্ত্রী আপনাকে সান্তনা দেন নাকি আপনি তাকে সান্তনা দেন??

উত্তর এল, আমি অল্পেই ঘাবড়ে যাই, সে আমাকে সান্তনা দেয়।

পারিবারিক দায় দায়িত্বের মধ্যে আপনার অংশ কতটুকু??

অতি সামান্য, অর্থ উপার্জন বাদে।

অফিসে আপনার পারসোনালিটি নিয়ে অন্যদের মন্তব্য কি??

এভারেজ।

কিছু টেস্ট দিলাম।

এই মানুষটার ভিটামিন ডি, জিংক, ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি ছিল। ডি লেভেল ছিল মাত্র ১৫.৫। ফ্রি টেস্টোস্টেরন লেভেল ৬.৪ মাত্র!!

ওজন ছিল ৫.৫ ফুটে ৬৯ কেজি, কোমরের মাপ ছিল ৩৭।

৪-৫ বার কনসাল্টেশন নিয়ে বছর খানেক ডায়েট আর স্ট্রেংথ ট্রেইনিং করার পর মহসিন সাহেবের টাইমিং ধীরে ধীরে বেড়ে হল প্রায় ১৫ মিনিট। ইরেক্টাইল ডিজফাংশনও উধাও। এরপর বহুদিন খবর নেই।

হঠাত গত মাসে একদিন ওয়াটস্যাপে মেসেজ এল, মহসিন সাহেবের।

ভাই, আমার ওজন এখন ৬৪, কোমর ৩০ ইঞ্চি।আগের মত সব কাজে ভয় লাগে না, যেকোন ভারী কাজ আমিই এগিয়ে গিয়ে করে ফেলি। পারিবারিক দায় দায়িত্ব নিতেও ভয় পাই না, পালাই না কোনকিছু থেকে। বউ আমাকে আগের চেয়ে অনেক বেশি ভালোবাসে। সে এখন আমাকে রেস্পেক্ট করে আগের চেয়ে অনেক বেশি।

আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।

আমার মনে পড়লো ড. ফিশারের কথা।

প্রকৃতিতে নারী প্রানীরা পুরুষ প্রানীদের সম্মান করে কিছু ক্ষমতার কারনে।

পুরুষদের প্রতিরক্ষার ক্ষমতা, শিকার ধরার ক্ষমতা, যৌন ক্ষমতা এবং চারপাশ সম্পর্কে জ্ঞানের কারনে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করার ক্ষমতা, এই পাচ ক্ষমতা হচ্ছে পুরুষ প্রানীদের জন্য নারীর কাছ থেকে সম্মান পাবার মূল হাতিয়ার।

Share
admin