প্যাশেন্টস ডায়েরি: পর্ব – ৪
সেদিন অদ্ভুত এক আন্টির দেখা পেলাম। আমার এক কঠিন ভক্তের বোন। বয়স ৫২ বছর।
আন্টির স্বামী বারডেমের অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন প্রায় ২০ বছর।
এই ২০ বছরের প্রায় পুরোটাই আন্টি ছিলেন ডায়বেটিসে আক্রান্ত। ২০১৮ সালে নিজের ওভারি-ইউটেরাস ফেলে দেয়ার পর তিনি অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিসের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে ভাইয়ের পরামর্শ অনুযায়ী শুরু করলেন ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং।
প্রায় ৪ বছর ফাস্টিং করার পর তার ওজন কমে ৬৮ থেকে ৪৯ এ এল এবং শুধু মেটফরমিন নিয়েই ডায়বেটিস সম্পুর্ন নিয়ন্ত্রনে থাকা শুরু করলো। এসময় এই আন্টি লো কার্ব-কিটো করেছেন বেশিরভাগ সময় এবং যেহেতু তার ভাই ইউকেতে থাকেন এবং নিউট্রিশন-ন্যাচারোপ্যাথি নিয়ে পড়াশোনা করেন, তিনি প্রচুর উন্নতমানের সাপ্লিমেন্টও ব্যবহার করতে পেরেছেন।
সেদিন তিনি যখন আমার কাছে এলেন আমি তার রিপোর্টগুলো দেখে অবাক হয়ে গেলাম। হিস্টেরেকটোমির পর এত সুস্থ থাকতে কোন মহিলাকে আমি দেখি নি।
বেচারি সুস্থতার দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছেন নিজের ও ভাইয়ের চেষ্টায়, শুধু ফাইনাল টাচটা বাকি। প্রফেশনালের সহায়তা ছাড়া শেষ কয়েক মাসে ওনার টেকনিকগুলি সেভাবে কাজ করছিল না। তাছাড়া নানান ব্যস্ততায় বেশ খানিকটা ভিসেরাল ফ্যাটও গেইন করেছিলেন।
উনি অনেক আফসোস করলেন।
সবসময় দেখেছেন লো কার্ব হাই ফ্যাট ডায়েটে থেকে ফাস্টিং করলে ওনার ডায়বেটিস ইনসুলিন ছাড়াই নিয়ন্ত্রনে থাকে, কিন্তু তিনি যেসব চিকিৎসক্রর কাছে গেছেন তারা ওনাকে এটার জন্য প্রচন্ড তিরস্কার করেন। এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে উনি বাধ্য হয়েছেন বারডেম ছেড়ে দিতে।
অথচ, অন্যদের উচিত ছিল ওনাকে একটা কেইস স্টাডি হিসেবে নেয়া এবং এখান থেকে ফাইন্ডিংস বের করা। বিজ্ঞান তো অনুসন্ধিৎসার বিষয়।
খিলগাওনিবাসী এই আন্টিকে যে প্রোগ্রামে নিয়েছি, ওনার ৬ মাসের বেশি লাগবে না সুস্থ হতে, ইনশা আল্লাহ।
সবচেয়ে দুর্দান্ত ব্যাপার হল ওনার মানসিকতা। ওনার বয়সী সবাই যে জায়গায় হাল ছেডে দেয়, সেখানেই শুরু ওনার লড়াই।
আন্টির প্রতি শ্রদ্ধা এবং তার ভাই জনাব স্বপন আলমের জন্য ভালোবাসা, যিনি বোনকে পথ দেখিয়েছেন এই স্মরনীয় জার্নিতে।