বডি মিজারমেন্ট ট্র্যাকিং: মেয়েদের জন্য ওজন মাপার চেয়েও যা অনেক সময় বেশি দরকারী
ধরেন, আপনার ওজন কমে গেল ১২ কেজি, কিন্তু সেটা কমলো অসামঞ্জস্যভাবে। চেস্ট-হিপ কমলেও ওয়েস্ট(রিব কেইজের ঠিক নিচের সরু জায়গা)-বেলি (নাভি বরাবর পেটের অপেক্ষাকৃত মোটা অংশ) কমলো না।
এটা একজন মেয়ের জন্য কি হতাশাজনক ও বিদঘুটে বিষয় তা শুধু মেয়েরাই জানেন। কারন ওজন কমিয়ে আপনারা শুধু হেলথ বেনিফিটস পেতে চান না, কসমেটিক বেনিফিটও পেতে চান। কিন্তু এই কসমেটিক বেনিফিট নেয়া মেয়েদের জন্য খানিকটা কঠিনও বটে। বিশেষভাবে যারা অনলাইনে শেয়ার করা ১২০০-১৪০০-১৬০০ কিলোক্যালরির লো ফ্যাট ডায়েট ফলো করে ওজন কমান, তারা প্রায়ই দেখেন পেট ২ ইঞ্চি কমলে চেস্ট কমে গেছে ২.৫-৩ ইঞ্চি, হিপ কমেছে একই তালে। ফলে ওজন কমলেও বডি শেইপের অবস্থা হয় আগের কাছাকাছিই থাকে, নয় আরো খারাপ হয়। এরপর মা-ভাবী-বান্ধবীদের কাছ থেকে কথা শোনার পর হতাশ হয়ে ডায়েট ছেড়ে দেন তারা। কিছুদিনের মধ্যেই ফেরেন আগের ওজনে। ফলাফল, আরো হতাশা।
মেয়েদের ফিটনেস ইমপ্রুভমেন্টে বডি মিজারমেন্ট ট্র্যাকিং তাই ওয়েট ট্র্যাকিংয়ের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বডি মিজারমেন্ট ঠিকভাবে কমলে, অর্থাৎ ওয়েস্ট-বেলি বেশি কমে চেস্ট-হিপ কম কমলে বুঝতে হবে আপনার ডায়েট আপনাকে হরমোনাল ব্যালেন্সের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যদি তার উল্টোটা হয়, তাহলে বুঝতে হবে, আপনার ডায়েটের ফলে আপনি ওজন কিছুটা কমালেও অপটিমাম হরমোনাল ব্যালেন্সে পৌছুতে পারছেন না।
এটা কেন হয়??
উত্তরঃ
১) বডি টাইপ চিনতে ভুল করাঃ আপনি যার আন্ডারে থেকে ডায়েট করছেন তিনি যদি আপনার বডি টাইপ চিনতে ভুল করেন তাহলে আপনি ভুলভাবে গেইন ও ভুলভাবে লুজ করবেন।
২) রঙ টাইপ অফ ফ্যাট খাওয়াঃ আপনি যে ফ্যাট খাচ্ছেন তা যদি আনন্যাচারাল ফ্যাট হয়, তাহলে এই সমস্যা থাকবেই। দেখবেন পেট কম কমবে, অন্যান্য স্পটে বেশি কমবে।
৩) রং টাইপ এন্ড রং এমাউন্ট অফ কার্বস খাওয়াঃ আপনি যদি কম ফাইবারওয়ালা-বেশি গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্সওয়ালা কার্ব-যেমন আটার রুটি-ইন্সট্যান্ট ওটস খান, আলু খান তাহলে পেট কমবে কম, অন্যান্য স্পট কমবে বেশি। খেতে হবে রোল্ড ওটস/ব্রাউন রাইস, তাও ক্রমেই কমিয়ে আনতে হবে পরিমান।
৪) ওয়ার্ক আউট প্ল্যানিংয়ে ভুল থাকাঃ খুবই স্বাভাবিক সমস্যা। শরীরের যে অংশটা চাপাতে চান, সেখানে কমপ্রেসর টাইপ এক্সারসাইজ-প্ল্যাংক-ক্রাঞ্চ দিতে হবে। যে অংশটা ফোলাতে চান, সেখানকার মাসল গুলোকে পাম্পিং স্টিমুলেশান দিতে হবে।
৫) ঘুমঃ সঠিক সময়ে না ঘুমালে শরীর ইহজিন্দেগীতে কথা শুনবে না। আজ সোজা তো কাল বাকা, ইহাই ভবিতব্য। রাত ৯-১১টার মধ্যে ঘুমাতে চেষ্টা করেন, একেবারে না পারলে ১২টা অন্তত।
ওহ, জরুরী!
কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল-সুগার চেক না দিলেও কিন্তু এই সবকিছু করার পরে পেট আগের জায়গায় থেকে যেতে পারে।
এই ছবিটা আমার এক প্যাশেন্টের কাছ থেকে নেয়া। আমার প্যাশেন্টদের আমি মিজারমেন্ট ট্র্যাক করতে বলি, সম্ভব হলে এক্সেল শিটেই রাখতে বলি। নিজের উন্নতি-অবনতি তখন নিজেই বোঝা যায়, আর তদন্ত করে বের করা যায়, অনিয়মটা কোথায় হচ্ছে।