সুস্বাস্থ্য সুন্দর বিবাহিত জীবনের প্রধান সম্পদ
জাহিদ সাহেব বাংলাদেশের একটা ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট।
জাহিদ আর সাবরিনার দুটো ছেলে আর একটা মেয়ে আছে। তাদের প্রেমের বিয়ে, বিয়ের পনেরো বছর পূর্ন হল এই বছর জানুয়ারী মাসে। ম্যারেজ ডেতে জাহিদ সাহেবকে প্রথম চেম্বারে নিয়ে আসলেন তার স্ত্রী সাবরিনা। জাহিদ সাহেবের বয়স প্রায় ৪৪, সাবরিনার বয়স ৩৭। চেম্বারে আসার আগে জাহিদ সাহেব বুঝতেও পারেন নি, কেন তাকে তার স্ত্রী এদিকে নিয়ে আসছেন।
সাবরিনা বিয়ের পনেরো বছর পূর্তির কিছুদিন আগে স্বামীর লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করে দেখেছিলেন, ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল ৮০০+!! রক্তচাপ প্রায়ই ১৫০ ছুই ছুই থাকে।
আর দশজন পুরুষ মানুষের মত জাহিদ সাহেবও মোটামুটি নিজের ব্যাপারে উদাসীন, তার ধারনা ছিল, রেস্ট নিলে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তার স্ত্রী মনে করছিলেন, তাদের প্রয়োজন একটা ভাল লাইফস্টাইল।
জাহিদ সাহেবকে প্রথমে একটা প্যালিও ডায়েট দিলাম, ৩ সপ্তাহের। এরপর একটা ৬ সপ্তাহের মডারেট কার্ব ও ৮ সপ্তাহের লো কার্ব দেয়ার পর গত পরশু তাদের সাথে আবার আমার দেখা হল। ফাস্টিং শুরু করেছিলেন ১২ ঘন্টার টাইম রেস্ট্রিক্টেড ইটিং থেকে, পরে ২৪ঃ১২ ঘন্টার ফাস্টিং করেছেন।
মোস্ট রিসেন্টলি, টোটাল কোলেস্টেরল লেভেল দুশোর কাছাকাছি, ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল ১৮৮, পেটের মাপ এসেছে ৪২ ইঞ্চি থেকে ৩৫ ইঞ্চিতে, ওজন কমে ৯১ কেজি থেকে ৭০ কেজিতে এসেছে সাড়ে পাচ মাসে। রক্তচাপ এখন থাকে ১৩০/৮৫ তে।
সাবরিনা আপা আমার পেইজের ফলোয়ার ছিলেন তার আগে ৭ মাস ধরে। নিজের ম্যারেজ ডেতে তিনি চিন্তা করেছেন, স্বামীকে দেয়া সবচেয়ে বড় গিফট হবে স্বামীর সুস্বাস্থ্য ফিরিয়ে দেয়া।
আমরা জীবনে চলার পথে একজন আরেকজনকে অনেক উপহার দেই। কিন্তু বয়স যখন দুজনেরই চল্লিশের কোঠার দিকে, তখন স্বাস্থ্য সচেতনতাই হতে পারে সবচেয়ে বড় উপহার।
বেশিদিন একসাথে বাচতে হলে আমাদের সবার আগে সুস্থ থাকা চাই।