হরমোনাল ইমব্যালেন্স নিয়ে প্রেগন্যান্সিতে যাওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত?
পিসিওএস/ফাইব্রয়েডস থেকে সুস্থতার জন্য যারা আমার সাথে কনসাল্ট করছেন অনেকের মধ্যেই একটা প্রবনতা আমি খেয়াল করছি যা আখেরে আপনাদের বিপদ ডেকে আনছে।
ফাইব্রয়েডস/পিসিওএসের কারনে কনসিভ করতে পারছিলেন না, এরপর আমার প্রোটোকলে থেকে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করেছেন, পিরিয়ড রেগুলার হয়েছে, ভাল ওভুলেশান হয়েছে। আত্মীয়-স্বজন-বাবা-মা-শ্বশুর-শ্বাশুড়ী-বান্ধবীরা বলছেন, বাবু নিয়ে নাও।
আপনিও ভাবছিলেন, এই তো সুযোগ, নিয়ে নেই বাবু। আমাকে কিছু জানালেনও না, জিজ্ঞেসও করলেন না কি করবেন।
তারপর একদিন কনসিভ করে ফেললেন।
এরপর আমাকে জানালেন, কনসিভ করেছি, সিম্যাগ প্রোটোকলে যেতে চাই ন্যাচারাল ডেলিভারির জন্য।
অথবা, সেটাও জানালেন না।
কয়েক মাস পর, আপনার মিসক্যারেজ হল, অথবা প্রেগন্যান্সি কমপ্লিকেশনের কারনে হাসপাতাল ঘুরে আসতে হল।
আমি পইপই করে সবাইকে মানা করি যে ম্যানেজমেন্ট শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাবু নেয়ার ট্রাই করার প্রয়োজন নেই, ম্যানেজমেন্ট শেষ হওয়ার পরে খুব সহজে বাবু হবে ইনশা আল্লাহ। অথচ আপনারা শোনেন ফ্যামিলি-রিলেটিভদের কথা।
এখন থেকে এক বছর আগে যারা পিসিওএস কিউর করার জন্য প্রোটোকল নিয়েছিলেন এবং মেইনটেইন করে গেছেন, দুইজন বাদে সবাই সুস্থ আছেন এবং যারা ম্যারিড তাদের অধিকাংশই কনসিভ করেছেন ইন দ্যা মিনটাইম।
যারা প্রোটোকল থেকে বেরিয়ে বাবু নিয়েছেন তাদের বেশিরভাগই কমপ্লিকেটেড, হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সির ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন, প্রায়ই মিসক্যারেজের কথা শুনছি।
আমি সবসময় বলি গোড়ার সমস্যা সমাধান করতে হবে।
বাংলাদেশীদের প্রধান সমস্যা, গোড়া কেটে আগায় পানি ঢালা। মূল সমস্যা ঠিক না করে সিম্পটম চলে গেলেই মনে করা যে সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে।
যারা ম্যারিড এবং পিসিওএসে ভুগছেন, প্লিজ, কমপ্লিটলি সুস্থ না হয়ে প্রেগন্যান্সিতে যাবেন না। কেউ কেউ প্রোটোকল কমপ্লিট না করেই বাবু নিচ্ছেন, হচ্ছেও। কিন্তু এই শিশুগুলো পৃথিবীতে আসছে বাড়তি ডায়বেটিস-পিসিওএসের রিস্ক নিয়ে।
অনেকেই মা হচ্ছেন পিসিওএস নিয়ে এগুলো মানুষ আপনাকে শোনাবে, কিন্তু মিসক্যারেজের পর বুকফাটা কান্নার কথা আপনার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা হবে।
ধৈর্যশীল হন প্লিজ। আমি জানি এবং বুঝি, আশেপাশের মানুষকে উপেক্ষা করা খুব কঠিন। কিন্তু একটা সুন্দর প্রেগন্যান্সি ও সুস্থ সন্তান অর্জন আশেপাশের মানুষকে সন্তুষ্ট করার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।