ন্যাচারাল ডেলিভারি কমে যাচ্ছে কেন – ১
ন্যাচারাল ডেলিভারি কমে যাওয়ার প্রধান কারনগুলো নিয়ে একটা সিরিজ লেখার কথা ছিল। আজকে আমরা সিরিজটা শুরু করবো।
আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, ন্যাচারাল ডেলিভারি কমে যাওয়ার প্রথম কারন, গত শতাব্দীর মেডিক্যাল রেভলিউশান, বিশেষভাবে সিজারিয়ান।
কিন্তু, এই সিজারিয়ানের কারনেই আসলে বহু নারী প্রসবকালীন মৃত্যু থেকে বাচতে পারছেন।
উদাহরন দেই।
১৯৮৫ সালে বাংলাদেশে প্রতি ১ লাখ প্রসুতি নারীর মধ্যে গর্ভাবস্থা ও প্রসবকালীন-পরবর্তী জটিলতায় মারা যেতেন ৫৭৪ জন নারী, আজকে সেখানে প্রতি ১ লাখ প্রসুতি নারীর ভেতর মারা যান মাত্র ১০৫ জন। মাত্র ৩৫ বছরে বাংলাদেশ মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়েছে প্রায় ৪০০%।
এখানে সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের।
কিন্তু, কিন্তু, কিন্তু, এখানে একটা কিন্তু আছে।
এই সময়ের মধ্যে আমাদের নারীদের মধ্যে পোস্ট পার্টাম ওয়েট গেইন, জেস্টেশনাল ডায়বেটিস এবং লোয়ার ব্যাকপেইন অনেক বেড়েছে।
ফিজিক্যাল এক্টিভিটিতে আকাশ্চুম্বী পরিবর্তন আসায় মাসল মাস কমে গেছে অনেক। ওদিকে রোগবালাই-মহামারীতে পূর্ণ একটা পৃথিবীতে সুস্থ জীবনযাপন করা একজন সিজারিয়ান শিশুর জন্য হয়ে যায় অনেক বেশি কঠিন।
এখন কথা হচ্ছে, সেইফ প্রেগন্যান্সি কি এতই কঠিন আসলে?
তো দেখেন, ব্যাপারটা হচ্ছে, এক লাখে ১৯৮৫ সালে মারা গেছেন ৫৭৪ জন। মানে জীবিত ছিলেন ৯৯, ৪২৬ জন। তাহলে, ন্যাচারাল প্রেগন্যান্সি আসলে অতটাও কঠিন না যতটা মনে করা হচ্ছে।
আর এই ২০২১ সালে, ১৯৮৫ সালের একদম টপ ক্লাস মায়ের চেয়েও বেটার মেডিক্যাল সাপোর্ট লোয়ার মিডল ক্লাস মায়েরা পাচ্ছেন ডিউ টু টেকনোলজিক্যাল প্রগ্রেস। দ্যাটস হোয়াই, আমি প্রথমেই বলবো, ন্যাচারাল ডেলিভারির চেষ্টা করুন। যদি একান্তই সম্ভব না হয়, সিজারিয়ানের সুবিধা তো আছেই।
অবশ্য এর মধ্যে কিছু নতুন কিন্তু এসে হাজির হয়েছে।
১৯৮৫ সালের মায়েদের এভারেজ ম্যাটারনাল এইজ এখনকার মায়েদের এভারেজ ম্যাটারনাল এইজ আলাদা। ওয়েট আলাদা। বেবিদের মাথার সাইজ আলাদা। ম্যাগনেসিয়াম ডেফিসিয়েন্সি লেভেল আলাদা, স্ট্রেস লেভেল আলাদা, এইজিং লেভেল আলাদা, ওমেগা থ্রি-ওমেগা সিক্স ব্যালেন্স আলাদা। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স আলাদা, ক্যালসিয়াম-ম্যাগনেসিয়াম ব্যালেন্স আলাদা, ওয়েস্ট টু হিপ রেশিও, বোন ডেন্সিটি স্কোর আলাদা।
আশা করি বুঝতেই পারছেন, এটা আসলে খুব একটা সোজা আলাপ নয়।