প্যাশেন্টস ডায়েরি: পর্ব – ৯
চকলেট সিস্ট থেকে সুস্থতায় ফেরাঃ
নাজিয়া পেশায় একজন প্রাইভেট সার্ভিস হোল্ডার, বয়স ৩৮। বাচ্চা নেয়ার জন্য চেষ্টা করছেন অনেকদিন যাবত, কিন্তু বাদ সেধেছে চকলেট সিস্ট।
পেইজের কিছু সাকসেস স্টোরি দেখে চকলেট সিস্ট নিয়ে তিনি যখন প্রথম আমার কাছে এলেন, সেটা মাঝারি আকারের ছিল। আমি মনে মনে ভাবলাম, এটা ঠিক করতে সম্ভবত ৯-১২ মাস লাগবে।
প্রথমে ফাস্টিং শুরু যখন করলেন, এক মাসে তেমন কোন উন্নতিই হল না। ১৬ ঘন্টা ফাস্টিং করলে আসলে তেমন কোন উন্নতি হয় না, কিন্তু এটাই শুরুর প্রথম ধাপ।
তবে এই সময়ে ওনার ক্লান্তি-মুড সুইং কমে গেল।
এরপর শুরু করলাম সাপ্লিমেন্টাল থেরাপি এবং থেরাপিউটিক ফাস্টিং, প্রথমে ১৮, এরপর ২০। এরমধ্যে নাজিয়াকে কিছু হাই ডোজ স্টেরয়েড ও এন্টিবায়োটিক দেয়া হল আইভিএফ পারপাসে। সেগুলি ডিটক্স করতে আমার আবার দিতে হল বাড়তি থেরাপি। দুঃখজনকভাবে আইভিএফ কাজ করলো না। সিস্ট বা ফাইব্রয়েডস থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই আইভিএফ কাজ করে না।
শেষমেশ, মে মাসের দিকে আমি বুঝতে পারলাম, ওনার সিস্টটা বেশ খানিকটা শুকিয়ে গেছে। আমি ওনাকে জানালাম, আপু আপনি সুস্থতার বেশ কাছাকাছি।
জুনের মাঝামাঝিতে আল্ট্রা করে দেখা গেল সিস্ট নেই। আলহামদুলিল্লাহ।
বেশি না, মাত্র সাড়ে চার মাস।
এটা তার ডিটারমিনেশানের ফল। এই সময়ে হওয়া দাওয়াতগুলো তিনি এড়িয়ে চলেছেন, মানুষের কথা যথাসম্ভব কম কানে নিয়ে নিজের কাজটা করে গেছেন।
চাকরিজীবী নারীদের জন্য ফাস্টিং অনেক কারনেই গৃহিনীদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কঠিন। কিন্তু সাধারনত চাকরিজীবী নারীরা গৃহিনীদের চেয়ে বেশি ডিটারমাইন্ড থাকেন।
নাজিয়াকে অভিনন্দন।
চকলেট সিস্ট কোন অনিরাময়যোগ্য রোগ নয়। সঠিক নির্দেশনা আর শৃঙখলা মেনে ডায়েট+লাইফস্টাইল ঠিক করলে এটা খুবই নিরাময়যোগ্য অসুখ।