যে কারনে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে ডায়েট ফালসাফা
অস্বাভাবিক জীবনযাত্রার কারনে ২০৩০ সালে বাংলাদেশে সম্ভাব্য ডায়বেটিস রোগীর সংখ্যা হতে যাচ্ছে সাড়ে তিন কোটি থেকে পাচ কোটির মধ্যে।
এদের অনেকের ক্ষেত্রেই ডায়বেটিসের বাইরে আরো কিছু লাইফস্টাইল ডিজিজ যুক্ত হবে।
এদের মধ্যে এক নম্বর হচ্ছে ফ্যাটি লিভার, যে রোগের কোন স্পষ্ট দৃশ্যমান লক্ষণ নাই।
আর সবচেয়ে বড় ঘাতক ব্যাধি হবে হার্ট ডিজিজ এবং স্ট্রোক। ইতোমধ্যেই ২০২০ সালে বাংলাদেশে যত কারনে মানুষ মারা গেছে তার মধ্যে এক নম্বর কারন হার্ট ডিজিজ। দশ বছর আগেও দক্ষিণ এশিয়াকে বলা হত হার্ট ডিজিজ মহামারীর নেক্সট হটস্পট, সেই ভবিষ্যদ্বানী এখন বাস্তবতায় পরিনত হয়েছে।
বাংলাদেশে আরেক মহামারীর উত্থান ঘটছে, ঘুমের অভাবের মহামারী। এই মহামারী আরো অনেক সমস্যার জন্ম দিতে যাচ্ছে সামনে।
গ্যাস্ট্রিক অলরেডি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে, নেই সমাধান। দেশে ওভার দ্যা কাউন্টার বিক্রি হওয়া ড্রাগের মধ্যে সম্ভবত প্যারাসিটামলের পরেই থাকবে গ্যাস্ট্রিক।
কোন বড় সার্ভে ছাড়া শুধু মাত্র ডায়েটারি এনালাইসিস থেকেই বলে দেয়া সম্ভব, বাংলাদেশের প্রায় ৭৫-৯০% মানুষ
প্রোটিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি থ্রি, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, জিংক, বোরন, সেলেনিয়ামের মত গুরুত্বপূর্ণ মিনারেলের অভাবে ভুগছে।
সারা দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষেরই হাড়ের ওজন কম, শরীরে নেই যথেষ্ট মাংসপেশী।
আমাদের লক্ষ্য, স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মাধ্যমে সবাইকে সুস্থ জীবনে নিয়ে আসা।
২০৩০ সালে পাচ কোটি মানুষ ডায়বেটিসে ভোগা মানে, প্রায় প্রতিটা ঘরেই একাধিক ডায়বেটিক প্যাশেন্ট থাকবে। শহরগুলোতে অলরেডি আছে।
একারনে, এখন সাবধান না হলে পরে আফসোস করে লাভ হবে না।
সারাদেশে খাদ্যে ভেজাল, অখাদ্য-কুখাদ্য ভক্ষণ, ভুল কৃষি, বাণিজ্য, পরিবেশ ও খাদ্যনীতি, ভুল স্বাস্থ্যনীতির কারনে লাখে লাখে মানুষ আজ অসুস্থ এবং এই অসুস্থতার সমাধান হচ্ছে মূলত উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা, যা মূল সমস্যার সমাধানে কাজে আসছে না।
এদিকে মড়ার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে এসেছে প্লাস্টিক আর কসমেটিক্স। এই দুটো জিনিসের আক্রমণ থেকে কেউই বাচতে পারছে না। মায়ের ত্বক থেকে বিষাক্ত কসমেটিক্স চলে যাচ্ছে শিশুর শরীরে।
আমি ইস্যুভিত্তিক অনলাইন নাচানাচি থেকে কিছুটা ডিজএনগেইজ হয়ে বাংলাদেশে ইতিহাস ও স্বাস্থ্য নিয়ে টানা কাজ করে যেতে চাই। সাথে আছেন দেশসেরা কয়েকজন পুষ্টিবিদ, বেশ ক’জন মেধাবী হেলথ সায়েন্সের ছাত্রছাত্রী, এছাড়াও আছেন বিভিন্ন শ্রেনী ও পেশার একঝাক আগ্রহী, উদ্যমী মানুষ।
আমাদের ন্যাচারাল হেলথ ক্লাব ডায়েট ফালসাফা খোলা হয়েছে আজকে দুদিন। আমাদের উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট। আমরা খাদ্য, পুষ্টি, ঘুম, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, ব্যায়াম এবং সঠিক অভ্যাসের মাধ্যমে মানুষকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় নিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করবো।
সামনে রমযান উপলক্ষে গ্রুপে কিছু এক্সক্লুসিভ পরিকল্পনা নেয়া হবে ইনশা আল্লাহ।
ডায়বেটিক প্যাশেন্টদের জন্য রমযানে ডায়বেটিস ম্যানেজমেন্ট এবং পেটে বাড়তি চর্বি যাদের তাদের জন্য ওবিসিটি ম্যানেজমেন্ট, এবং যাদের ওজন কম তাদের ওয়েট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে আমরা আগামী এপ্রিল থেকে কাজ শুরু করবো ইনশা আল্লাহ।
ঈদের পর থেকে ক্রমেই অফলাইনে ছড়িয়ে পড়বে কাজ। এই ক্লাব কাজ করবে সারাদেশের প্রতিটি জেলায়।
একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, অসুস্থ শরীরের চেয়ে বড় কোন বোঝা মানুষের জন্য আর নেই।