কোন কোন রোগীদের ভিটামিন ডির অভাব থাকার প্রায় শতভাগ সম্ভাবনা থাকে?
কোন কোন রোগীদের ভিটামিন ডির অভাব থাকার প্রায় শতভাগ সম্ভাবনা থাকে এটা যদি আমরা আগে থেকেই জানি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ডোজ নেই, আমাদের রোগের তীব্রতা যেমন কমে আসবে, তেমনি কমে আসবে ওষুধের ওপর নির্ভরতাও।
বেশিরভাগ ক্রনিক ডিজিজের রোগীদেরই ভিটামিন ডির অভাব থাকে এটা এখন প্রমানিত।
আপনার যদি পিসিওএস, ডায়বেটিস/হার্ট ডিজিজ, আর্থ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস, ক্যান্সার জাতীয় রোগ থাকে এবং আপনি যদি রিসেন্টলি কোন ভিটামিন ডি কোর্স না নিয়ে থাকেন, সম্ভাবনা খুবই বেশি যে আপনার ভিটামিন ডির অভাব আছে।
এধরনের রোগে আক্রান্তদের জন্য ভিটামিন ডির আরডিএ সাধারন মানুষের চেয়ে আলাদা হবে, আমার অভিজ্ঞতা বলে ডায়বেটিক রোগীদের মধ্যে যাদের গা-হাত-পা ব্যথা থাকে বা রাতে ভাল ঘুম হয় না, তারা প্রতিদিন সকালে ও দুপুরে ২০০০ আইইউ করে ভিটামিন ডি যদি নিয়মিত ৬ মাস নেন এবং তারপর দিনে ২ হাজার আইইউ করে নেন, এই সিম্পটমগুলো অনেকটাই দূর হবে আবার হাইপারভিটামিনোসিস ডি হওয়ার ভয়ও থাকবে না। এক্ষেত্রে ভিটামিন ডির সাথে দিনে ৮০০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম(সাপ্লিমেন্ট থেকে ৫০০ এমজি, খাবার থেকে ৩০০ এমজি) পটাসিয়াম ৬০০০ মিলিগ্রাম(পুরোটাই খাবার থেকে) প্রয়োজন হবে। মনে রাখতে হবে এগুলো ছাড়া ভিটামিন ডি কাজ করবে না বা সাময়িকভাবে কিছু ফল দিয়ে তারপর উন্নতি থেমে যাবে। বেশিরভাগ কেইসেই নিউট্রিয়েন্ট একা একা কাজ করে না, অনেকগুলো নিউট্রিয়েন্ট একসাথে কাজ করে।
পক্ষান্তরে পিসিওএসের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডির ডোজটা স্পেইসিফিক হবে, রোগীর ভিটামিন ডি লেভেল দেখে এরপর ডাক্তার/নিউট্রিশনিস্ট ডোজ ফিক্স করবেন। অনেক পিসিওএস প্যাশেন্টেরই তীব্র ভিটামিন ডির অভাব থাকে, তাদের ক্ষেত্রে হাই ডোজও দরকার হয়, কারো কারো ইনজেকশান লাগে।
অস্টিওপোরোসিস-আর্থ্রাইটিস যাদের থাকে, তাদের জন্য ভিটামিন ডির সাথে চারটা জিনিস লাগে, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, বোরন আর কে টু। এ সব রোগের ক্ষেত্রেও ডি লেভেল টেস্ট করে এবং অন্যান্য ক্লিনিক্যাল টেস্ট করে তারপর ডোজ দেয়াই ভাল।
অনেক সময় ডি লেভেল স্বাভাবিক থাকলেও হাড়ক্ষয়ের রোগীরা ম্যাগনেসিয়াম ও বোরনের অভাবে ভিটামিন ডিকে ব্যবহার করতে পারেন না। অনেক সময় হাড়ক্ষয় ভিটামিন সি’র অভাব থেকেও হতে পারে। হাড়ের নরম অংশের যে ভাঙ্গাগড়া এর সাথে ভিটামিন সি’র ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।
সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি প্রয়োজন হয় ক্যান্সার রোগীদের। এছাড়া, যাদের দেহে শক্তিশালী ইনফ্ল্যামেশান/ইনফেকশান থাকে তাদের ভিটামিন ডি লেভেল কমে যায়।
যাদের শরীরে চর্বির পরিমান বেশি তারা স্বাভাবিকভাবে ভিটামিন ডি তৈরি করতে হিমশিম খান 7-DHC নামে একটা কম্পাউন্ডের অভাবে, এর কারন মূলত ইনফ্ল্যামেশান।
এটার পরিমান ঠিক করতে আমাদের গুড ফ্যাট খাওয়া প্রয়োজন।
ভিটামিন ডি আমাদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটা ভিটামিন।
নিয়মিত এটার ব্যবহারে আমরা অনেক রোগের জটিলতাকেই কমিয়ে আনতে পারি এবং ফিরতে পারি স্বাভাবিক জীবনে।