হাড্ডি মানেই কি কেবল ক্যালসিয়াম?
ব্যাপার হচ্ছে, হাড় হাড্ডি মানেই আসলে ক্যালসিয়াম না, আর গা ঝিনঝিন পা ঝিনঝিনও ক্যালসিয়াম ইস্যু না।
সেলুলার নিউট্রিশন যারা পড়েছেন, তারা জানেন, ক্যালসিয়াম হচ্ছে আমাদের হাড়ের মোট ভরের কেবলমাত্র ৩%। বাকি ৯৭% হচ্ছে কোলাজেন ও অন্যান্য মিনারেল, যাকে চীফ স্ট্রাকচারাল প্রোটিন অফ দ্যা বডি বলা হয়। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেহকোষে ক্যালসিয়ামের সাথে ম্যাগনেসিয়ামের অনুপাত হচ্ছে ১ঃ১০০০ থেকে ১ঃ১০০০০।
বাইরে থেকে বাড়তি ক্যালসিয়াম কোষে ঢোকা মানে কোষ থেকে ম্যাগনেসিয়াম বেরিয়ে যাওয়া।
এছাড়াও আরো অনেকগুলি কো ফ্যাক্টর এখানে আছে, যা আমাদের শরীরের অটোরেগুলেশন বজায় রাখে।
আমভাবে ক্যালসিয়াম সাজেস্ট করার কিছু বিপদ আছে।
১) রোগীর ব্লাড প্রেসার বাড়তে পারে
২) রোগীর ব্লাড গ্লুকোজ লেভেল ধীরে ধীরে আনস্টেবল হতে পারে যদি আগে থেকেই তার ইনফ্ল্যামেশান ও ম্যাগনেসিয়াম ডেফিসিয়েন্সি থাকে
৩) দীর্ঘমেয়াদে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট নিলে রোগীর জয়েন্ট পেইন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে
৪) রোগীর বেশ কিছু সফট টিস্যু অর্গানে ক্যালসিয়াম জমতে শুরু করবে
৫) রোগীর হৃদপিন্ড ক্রমেই দুর্বল হতে পারে
৬) আলটিমেটলি, হাড়ের ব্যথা আগের জায়গাতেই থেকে যাবে।
মাংসপেশীর ব্যথা, হাড়ক্ষয়, আর্থ্রাইটিস এগুলো শুধুমাত্র ক্যালসিয়াম ইস্যু নয়।
আজকাল ক্যালসিয়ামের সাথে একটুসখানি ভিটামিন ডি অথবা মেগাডোজে ভিটামিন ডি দেয়ার যে কপিপেস্ট চিকিৎসা চলছে, এটা কোন কোন ক্ষেত্রে রোগীর হার্টের জন্য বিশেষভাবে বিপজ্জনক।
রোগীদেরও দোষ আছে। রোগীরা ভাবেন যে তিরিশ বছর একের পর এক ভুল করে তিনি হাড়ের যে ১২টা বাজিয়েছেন, ডাক্তাররা তিন দিনে তা সমাধান করে দেবেন।
হাড়ের সমস্যা সমাধান করতে আপনাকে অন্তত দুই থেকে তিন বছর পরিকল্পিতভাবে ব্যায়াম ও ডায়েট মেইনটেইন করে যেতে হবে। হাড়ের মধ্যে অনেকগুলো (প্রায় ৩৬টি) নিউট্রিয়েন্ট থাকে, সেজন্য, ওভার অল ডায়েটে হাত না দিয়ে আসলে শুধু সাপ্লিমেন্টেশন করে বেশিদুর যাওয়া সম্ভব না।
আরেকটা বিষয়, হাড়ের ফিটনেসের সাথে ফিজিক্যাল স্ট্রেসের অভাব এবং মেন্টাল স্ট্রেসের আধিক্য জড়িত। শারীরিকভাবে পরিশ্রমী না কিন্তু দুশ্চিন্তা করেন সারাক্ষন, এমন মানুষেরা হাড়ের সমস্যায় বেশি ভোগেন। অতএব, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টও এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
হাড়ক্ষয়ের সমস্যা বা অস্টিওপোরোসিস একবার যদি হয়েই যায়, তা ঠিক করতে ৩ মাস থেকে ২ বছরও লাগতে পারে, নির্ভর করে অবস্থা কতটুকু গুরুতর তার ওপর।
বাট রিমেম্বার, দিস ইজ নট আ মিয়ার ক্যালসিয়াম কেইস। পাশাপাশি এটা এমন কোন ডিজেনারেশান না যার কোন সমাধান নেই।