লেবু মানেই ভিটামিন সি?
আপনি যদি ফটোগ্রাফি সাইট বা পেইজগুলোতে ঢোকেন আর ভিটামিন সি লিখে সার্চ দেন, দেখবেন লেবু-কমলা ছাড়া আর কিছু নাই।
অথচ লেবু বা কমলা কোনটাই আসলে ভিটামিন সি রিচ ফ্রুট না। এগুলো দেখতে সুন্দর, ফটো ভাল আসে তাই মার্কেটিং পারপাসে এগুলোকে ভিটামিন সি’র সাথে কানেক্টেড করা হয়।
আমাদের দেহের জন্য ভিটামিন সি এমন একটি ‘ মিরাকেল নিউট্রিয়েন্ট’ যার প্রয়োজনীয়তা আসলে একটি বা দুটি পোস্টের মাধ্যমে বলে শেষ করা সম্ভব নয়।
এটি মূলত আমাদের ত্বক থেকে শুরু করে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং দেহের ভেতর যা কিছু আছে সবকিছুর জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় নিউট্রিয়েন্ট।
প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক পরিমাণ ভিটামিন সি প্রতিদিন গ্রহণ না করা হলে দেহের যাবতীয় কার্যক্রমে ব্যাঘাত তো ঘটবেই, ধীরে ধীরে আমাদের দেহ পরিণত হবে বড় ছোট হাজারো রোগ এবং অস্বাভাবিকতার আাস্তানায়।
দৈনন্দিন খাবার থেকে আমরা ভিটামিন সি এর দৈনিক চাহিদা পুরোপুরি মেটাতে না পারলেও চাহিদার বেশ কিছুটা অংশ অনায়াসেই পূরণ করে নিতে পারি। কিন্তু এর জন্য কোন কোন খাবারে কি পরিমাণ ভিটামিম সি থাকতে পারে তা সম্পর্কে আমাদের পরিষ্কার ধারণা নেয়া প্রয়োজন।
আমাদের দেশীয় খাবারের মধ্যে তুলনামূলক ভালো পরিমাণ ভিটামিন সি পাওয়া যাবে এমন ১০ টি খাবারের নাম এবং খাবারের প্রতি ১০০ গ্রামে প্রাপ্ত ভিটামিন সি এর পরিমাণ নিচে একটি লিস্টের মাধ্যমে শেয়ার করেছিল Barnali Mostafa Muna
* আমলকি – ৪৫৩ মিলিগ্রাম
* পেয়ারা – ২২৮ মিলিগ্রাম
* সজনে পাতা – ২২০ মিলিগ্রাম
* জাম্বুরা – ১২২ মিলিগ্রাম
* আম – ১০৩ মিলিগ্রাম
* কাঁচা মরিচ – ১০২ মিলিগ্রাম
* কাকরোল – ৯৯ মিলিগ্রাম
* করলা – ৯১ মিলিগ্রাম
* আমড়া – ৭৭ মিলিগ্রাম
* জাম – ৭৪ মিলিগ্রাম
এই তালিকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের তৈরি।
কমলার সাথে বা লেবুর সাথে ভিটামিন সি’র সম্পর্ক অতি সীমিত। কমলার কমলা রঙের জন্য দায়ী মূলত ক্যারোটিন, যা ভিটামিন এ’র প্রি কার্সর। (আবার ধরে নেবেন না কমলায় প্রচুর ভিটামিন এ)
আর লেবুতে এসকরবিক এসিড(ভিটামিন সি) এর চেয়ে বেশি থাকে সাইট্রিক এসিড।
সাইট্রাস ফ্রুটস তথা টকফলে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে এটাও একটা জনপ্রিয় ভুল ধারনা।
ভিটামিন সি জিনিসটা প্রচন্ড টক, কিন্তু টক হলেই তাতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকবে, এটা এক প্রকার কুসংস্কার।
কিছু কুসংস্কারাচ্ছন্ন পুষ্টিবিদরা মূলত কোন খাবারে কি থাকে তা ঠিকভাবে না জেনেই শুধু ‘প্রচুর’ শব্দটা ব্যবহার করে আন্দাজের ওপর খাবার সাজেস্ট করার একটা সংস্কৃতি তৈরি করেছেন যা বিজ্ঞানের নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
খাবার থেকে ভিটামিন সি’র নিউট্রিশনাল ডোজ, দিনে ২০০ মিলিগ্রাম থেকে ১০০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত পাওয়া সম্ভব, তার বেশি নয়।
থেরাপিউটিক ডোজের জন্য তাই পাউডার বা ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়। দিস ইজ সিম্পল।