Top

সিম্যাগ বেবি: সাক্সেস স্টোরি – ১২

Sajal’s Diet Falsafa / CMag Baby  / সিম্যাগ বেবি: সাক্সেস স্টোরি – ১২

সিম্যাগ বেবি: সাক্সেস স্টোরি – ১২

স্বনামধন্য একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা তীব্র পিঠ ও কোমরের ব্যথা নিয়ে এলেন গত বছর। এই অবস্থার মধ্যেই তিনি মা হতে চলেছিলেন।
স্মরনশক্তির ১২টা বেজে গেছিল, সেই সাথে চলছিল কর্মস্থলের মানসিক চাপ। সারাদিন ক্লান্ত ও দুর্বল লাগতো তার। তখন এই আপুর ওজন ছিল ৬৯ কেজি, উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি।
এক্সরেতে পাওয়া গেল, বেচারির মেরুদন্ডের স্বাভাবিক কার্ভেচার বদলে গিয়ে তা অনেকটাই সোজা হয়ে গেছে, স্ট্রেইটেন্ড ব্যাকবোন বলে যাকে।
১২ সপ্তাহ থেকে ম্যানেজমেন্ট শুরু করা হল সিম্যাগ প্রোটোকলে। তিনি খেতে চান না, মুখে অরুচি এবং ভীষন দুর্বলতার কারনে ওয়ার্ক আউটও ভালোভাবে করতে পারেন না।
এই নিয়েই চললো ম্যানেজমেন্ট। প্রথম ফলো আপে অবস্থা তেমন না বদলালেও শেষমেশ ডায়েটটা চালিয়ে গেলেন আপুটা। পাশে ছিল স্বামীর নিরলস সমর্থন।
সেকেন্ড ফলো আপ মিস, ভদ্রমহিলার কোন খবর নেই, আমিও নানা ব্যস্ততায় গেলাম ভুলে।৷ শেষ ফলো আপের সময় সেই গর্ভবতী মায়ের ওজন তেমন বাড়েই নি। বাচ্চার ওজনও ঠিক আদর্শ ওজন না।
অনেক বুঝিয়ে প্রচুর খেয়ে শেষ ট্রাইমেস্টারটা পার করতে বললাম। একটা হাই ক্যালোরি ডায়েট প্ল্যান দিলাম, প্রায় ৩৫০০ ক্যালরির। পুরোপুরি খেতে পারেন নি।
এই সময়ের মধ্যে কাজের কাজ যা হল, ওনার ব্যাকপেইনটা অনেকখানি কমে গেল, মেমোরিও ইমপ্রুভ করলো। ব্রেইন ফগ কমলো অনেকখানি।
শেষ পর্যন্ত রমযান মাসের প্রথম সপ্তাহে খবর পেলাম, ন্যাচারাল ডেলিভারির মাধ্যমেই ওনার কোল আলো করে এসেছে ফুটফুটে এক সিম্যাগ শিশু, ওজন তিন কেজি।
বাবুটার নাম রাখা হয়েছে ওয়াজিহা।
ওয়াজিহা এখন প্রায় ৭ সপ্তাহে পড়েছে, মা ও শিশু দুজনেই ভাল আছে আলহামদুলিল্লাহ।
ন্যাচারাল ডেলিভারিকে যত কঠিন মনে করা হয় তত কঠিন হয় না যদি মায়ের ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে, কোমর-নিতম্ব ও উরুর পেশি ভাল থাকে।
ইভেন, আমাদের বেশিরভাগ মেয়েদেরকে যদি ১৩-১৫ বছর বয়স থেকে সঠিক ফিটনেস কোচিং ও নিউট্রিশনাল ম্যানেজমেন্ট দেয়া হত, সিম্যাগ প্রোটোকল নিয়ে ন্যাচারাল ডেলিভারি করার কোন প্রয়োজনই পড়তো না।
আমরা আশা করবো, মেয়েদের মায়েরা কিশোরী বয়সে তাদের বিশেষ যত্ন নেবেন, যাতে কর্মজীবন, সংসারজীবন, ব্যক্তিগত জীবন ও মাতৃত্বের চাপেও তারা থাকতে পারেন অটুট। আর এই বিশেষ যত্ন মানে বেশি বেশি খাওয়ানো নয়। সঠিক খাবার, সঠিক ব্যায়াম, সঠিক ঘুম, পরিমিত পরিমানে পড়াশোনা।
ওয়াজিহা ভাল থাকুক, ভাল থাকুক তার মা বাবা।

Share
sadia