জেসমিন আপুর লিন পিসিওএস, হাশিমোটোস থাইরয়ডাইটিসসহ হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সি প্রটোকল জার্নি
৫ ফিট ৫ ইঞ্চিতে, ৫৫ কেজি ওজনের সাথে পিসিওএস নিয়ে জেসমিন আপু প্রথম আমাদের কাছে আসেন। তিনি আমাদের জানান, তার পিরিয়ড পূর্বে কখনোই রেগুলার ছিলো না এবং এই ব্যাপার টা নিয়ে তিনি কখনোই বোদার্ড ছিলেন না।
গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর তার টনক নড়লো। তিনি নিজে থেকেই এসব নিয়ে প্রচুর ঘাটাঘাটি শুরু করলেন। অত:পর নিজে থেকেই শুরু করলেন লো-কার্ব ডায়েট এবং ওয়ার্ক আউট করা। পাশাপাশি তিনি একজন গাইনোকোলজিস্টের কাছেও ঘুরে আসলেন।
এদিকে আপু খেয়াল করলেন, ওয়ার্ক আউট করলে তার পিরিয়ড রেগুলার হয়,কিন্তু নিজে থেকে লো-কার্ব ডায়েট করার কারনে ওজন গেলো আরো কমে! ৫ ফিট ৫ ইঞ্চিতে ৪৯-৫০ কেজি ওজন আপুর হাইটের সাথে মানানসই না। তো সেই মূহুর্তে আপু ফিল করলেন, একজন এক্সপার্ট এর পরামর্শ নেওয়া খুব জরুরি।
এরপর তিনি আমাদের কাছে আসলেন। ইনভেস্টিগেশনে তার হাশিমোতোস থাইরয়ডাইটিস ধরা পড়ে।
প্রথম ফলো আপে আমাদের লক্ষ্য ছিলো হেলদি ওয়েতে আপুর ওয়েট গেইন করানো। এজন্য তাকে আমরা একটা হাই ক্যালোরি-হাই কার্ব ডায়েট প্ল্যান দেই।
পরবর্তীতে আপু যখন আমাদের কাছে সেকেন্ড ফলো আপে আসেন, তখন তার ওজন বেড়ে দাড়ায় ৫৮ তে। কিন্তু তিনি জানান যে আল্ট্রাসাউন্ডে তার একটা ডারময়েড সিস্ট ধরা পড়ে এবং গাইনোকোলজিস্ট এর পরামর্শে তিনি ইতিমধ্যে কনসিভ করেছেন।
এবার আমরা আপুকে সেকেন্ড ফলো আপ এবং থার্ড ফলো আপে ক্রমান্বয়ে ১৬ ঘন্টা ফাস্টিং এর সাথে হাই ফ্যাট ডায়েট এবং ১৪ ঘন্টা ফাস্টিং এর সাথে কিটো ডায়েট প্ল্যান দেই। সেকেন্ড এবং থার্ড ফলো আপে আপুর ওজন প্রায় একই রকম থাকে।
এইবার চতুর্থ ফলো আপে এসে দেখা গেলো আপুর ওজন বেড়ে ৬১ কেজিতে পৌছালো। আল্ট্রাতে তার ডারময়েড সিস্ট আগের চেয়ে বেশ খানিকটা শ্রিংক করেছে আলহামদুলিল্লাহ এবং সিস্টের সাইজ স্ট্যাটিক ই থাকছে। আপু প্রেগন্যান্সির কমন কিছু সমস্যায় ভুগছিলেন (GERD, ডাইজেশন সমস্যা) সেগুলোও ম্যানেজ হয়ে যায় বলে আপু আমাদের জানান।
লাস্ট ফলো আপে আপুকে ১৮ ঘন্টা ফাস্টিং এর সাথে একটা হাই ফ্যাট ডায়েট দেওয়া হয়। এছাড়াও পিসিওএস ম্যানেজ করার সাথে সাথে বাবুর সঠিক ডেভেলপমেন্ট নিশ্চিত এবং প্রেগন্যান্সিতে আপুর হাশিমোটোস থাইরয়ডাইটিস ইমপ্রুভড এবং গ্লুকোজ টলারেন্স এর ম্যানেজমেন্ট চলতে থাকে।
আপুর হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সি থাকলেও অবশেষে আল্লাহর অশেষ রহমতে বিশেষ কোন কমপ্লিকেশন্স ছাড়াই সফলভাবে আপু বেবি ডেলিভারি করেন। তিনি এবং তার নবজাতক সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলে আমাদেরকে জানান।
জেসমিনের কেইসটা আমাদের জন্য স্পেশাল।
আমরা এখানে হাতে কলমে ৩টা জটিল ব্যাপার প্রমান করেছি।
১)লিন পিসিওএস বা কম ওজনের মেয়েদের পিসিওএস থাকা অবস্থায় ওজন বাড়ানো এবং সিস্ট শ্রিংক করা সম্ভব।
২)কিটো ডায়েটেও কোন ইটিং ডিজর্ডার না ঘটিয়ে ধারাবাহিকভাবে ওজন বাড়ানো সম্ভব
৩)ধারাবাহিক ভাবে ক্যালরি এবং ওজন বাড়ার পরেও হাশিমোতোস থাইরয়ডাইটিস ম্যানেজমেন্ট করে সুস্থ সন্তানের জন্ম দেয়া খুবই সম্ভব।
আমাদের সাকসেস স্টোরিগুলো খুবই ইন্ডিভিজুয়ালাইজড।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এধরনের রোগীদের অবস্থা বেশ জটিল থাকে। তাদের ডায়েট কেউ কপি করার চেষ্টা করবেন না, হিতে বিপরীত হতে পারে।
ডায়েট থেকে ভাল ফল পেতে অন্তত ৬ মাস থেকে ১ বছর টানা ম্যানেজমেন্টে থাকার প্রয়োজন হয়। প্রয়োজন হয় যথেষ্ট ফ্যামিলি সাপোর্টেরও।
কিন্তু থেরাপিউটিক ডায়েট আপনার মেটাবলিজমকে পালটে দিতে পারে মিরাকলের মত করে!!