Top

সিম্যাগ বেবি: সাক্সেস স্টোরি – ১৮

Sajal’s Diet Falsafa / CMag Baby  / সিম্যাগ বেবি: সাক্সেস স্টোরি – ১৮

সিম্যাগ বেবি: সাক্সেস স্টোরি – ১৮

ইতালি প্রবাসী তানিয়া আপুর প্রথম প্রেগন্যান্সির অভিজ্ঞতা ছিলো খুবই বাজে। ডেলিভারির আগে বিপজ্জনক গর্ভকালীন জটিলতা প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া আপুকে অনেক ভুগিয়েছে।
২য় প্রেগন্যান্সিতে আপু সি-ম্যাগ প্রটোকলের ব্যাপারে জানার পর ২০ সপ্তাহে প্রথম ফলো আপ নেন। ২০ সপ্তাহে যখন তিনি প্রথম বার ফলো -আপে আসেন তখন তার প্রচন্ড পিঠ ও কোমর ব্যাথা ছিলো, মূলত ভিটামিন -ডি, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম ডেফিসিয়েন্সির কারনে , খাবারে অরুচি, এনিমিয়ার সাথে ছিল ভীষন শারীরিক দুর্বলতা। এই সবকিছুর চেয়েও যেটা বড় বিপিদ হয়ে দাড়িয়েছিল তা হচ্ছে খুবই আনকন্ট্রোলদ জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস এবং হাই কোলেস্টেরল লেভেল। মেডিক্যাল রিপোর্টে আপুর ফেরিটিন লেভেল ছিলো মাত্র ১৩, এল ডি এল ছিলো ৩০৮! স্ট্রং ইনসুলিন রেজিস্টেন্সের কারনে অল্পতেই বেড়ে যাচ্ছিল সুগার। কোলেস্টেরলের সাথে এলডিএইচ বেশি থাকার ফলে আমরা রোগীর হার্টের অবস্থা নিয়েও চিন্তিত ছিলাম।
এই অবস্থা দেখে প্রথম মাথায় এলো, সিম্যাগে নরমাল ডেলিভারি পরে, আগে এই মায়ের জীবনটা বাচাতে হবে। তাই তাকে মূলত আমরা আমাদের হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সি প্রোটোকলে নিয়ে যাই।
আমার লক্ষ্যে ছিলো তানিয়ার স্বাভাবিক ওজন ধরে রেখে বাচ্চার ওজন বাড়ানো সাথে ভিটামিন ডি, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ডেফিসিয়েন্সি ও এনিমিয়া দূর করে বিপি এবং স্ট্রেন্থ ধরে রেখে যেকোনভাবে হোক আবারও প্রিএক্ল্যাম্পশিয়া/এক্ল্যাম্পশিয়া হওয়া এড়ানো। এরপর যদি সম্ভাবনা থাকে তাহলে ন্যাচারাল ডেলিভারির চেষ্টা করা।
আপু মোট ৩টা ফলো-আপ নিয়েছেন।
২০ সপ্তাহে আমরা আয়রন ও ক্যালসিয়াম শোষন এবং ট্রাইগ্লিসারাইডস কমানোর লক্ষ্যে তানিয়াকে থেরাপিউটিক ডোজে ভিটামিন সি দেওয়া শুরু করি। পরবর্তীতে প্রয়োজন মোতাবেক ডোজ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া আমরা তার ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছি ম্যাগনেসিয়াম, ইনোসিটল, বি ভিটামিন্স, ডিএইচএ-ইপিএ, ভিটামিন ডি এবং এক্সটেন্ড রিলিজ পটাসিয়াম-ম্যাগনেসিয়াম কম্বিনেশান। এই ম্যানেজমেন্টটা কিছুটা ব্যয়বহুল ছিল, কিন্তু আমরা এবং রোগীর পরিবার যত্নের ব্যাপারে কোন ত্রুটি রাখতে চাই নি।
শেষ ফলো আপের সময় আমার লক্ষ্য ছিল বাচ্চার ওজন যেন ঠিক ২৫০০-২৮০০ গ্রামের মাঝামাঝি থাকে এবং মায়ের সুগার যেন কোনমতেই ১০ ছাড়িয়ে না যায়। উল্লেখ্য, সঠিক নিউট্রিশনাল ম্যানেজমেন্টে থাকলে অধিকাংশ মা-ই ইনসুলিন ছাড়াই জেস্টেশনাল ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে সক্ষম।
আলহামদুলিল্লাহ ৪০ সপ্তাহের মাথায় তানিয়া আপু সম্পুর্ন নিরাপদে ন্যাচারাল ডেলিভারির মাধ্যমে ২য় সন্তানের মা হওয়ার সু-সংবাদ জানিয়েছেন। জন্মের সময় বাচ্চার ওজন ছিলো ২৭৭০ গ্রাম।
আপু আমাদের সাফল্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন। আমরাও আশা করি তিনি যেন সুস্থ অবস্থায় তার সন্তানদেরকে লালন পালন করতে পারেন এবং সপরিবারে ভাল থাকেন।
Share
tanzima