ডায়াবেটিস এর সাথে ডায়েট ও লাইফস্টাইল এর সম্পর্ক
যে লোকটা বাইরে হাটাচলা বন্ধ করে অফিসের চেয়ারে বসা শুরু করলো, সে একজন সম্ভাব্য ডায়বেটিস রোগী হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পথে নিজেকে এগিয়ে দিলো।
The man who gives up an active outdoor life and is promoted to an office chair by this change becomes a promising candidate for diabetes.”
এই কথাটা ড. জসলিনের বলা।
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনের প্রথম গাইডলাইন যে মানুষটি তৈরি করেন, তার নাম ড. এলিয়ট জসলিন। তার প্রতিষ্ঠিত ক্লিনিক জসলিন ডায়বেটিস সেন্টার এই মুহুর্তে বিশ্বের বৃহত্তম ডায়বেটিস ম্যানেজমেন্ট ও রিসার্চ ইন্সটিটিউট।
ড. জসলিন প্রথম রোগী দেখা শুরু করেন ১৮৯৮ সালে। পরবর্তীতে তিনি ড. ফ্রেডরিখ এলেনের সাথে মিলে একটা লো কার্ব, লো ক্যালরি ডায়েট ফরমুলা তৈরি করেন। তিনি সে সময়কার সবচেয়ে বড় ডায়বেটিক ডেটাবেজ তৈরি করেন এবং এখন পর্যন্ত তার ক্লিনিকের ডেটাবেজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডায়বেটিক ডেটাবেজ। ড. জসলিন বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বিখ্যাত ডায়বেটোলজিস্ট এবং আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম ডায়বেটিস স্পেশালিস্ট। তার লেখা দ্যা ট্রিটমেন্ট অফ ডায়বেটিস মেলাইটাসকে ডায়বেটিস চিকিৎসার বাইবেল হিসেবে মনে করা হত। তিনিই প্রথম ডাক্তার ও রোগীর জন্য আলাদা ডায়বেটিক ম্যানুয়াল তৈরি করেন।
ইন্টারেস্টিংলি, ড. জসলিনের ডায়বেটিক ডায়েট কিন্তু দিনে ছয়বেলা খাওয়া এবং দুইবেলা রুটি খাওয়ার ডায়েট ছিল না। তিনি ড. এলেনের স্টারভেশন ডায়েট ব্যবহার করতেন যাতে ক্যালরি ছিল ১০০০ এর কম এবং কার্বোহাইড্রেট(ভাত-রুটি-আলু-ভুট্টা-মিষ্টি ইত্যাদি এবং ফল) ছিল ১০ গ্রামেরও কম।
এই ডায়েটে জসলিন তার রোগীদের প্রায় দুই বছর ধরে রাখতেন, তখনো টাইপ ওয়ান আর টাইপ টু আলাদাভাবে চিহ্ণিত হয় নি। ফলে, ড. জসলিনের অনেক রোগী যারা টাইপ ওয়ান ছিলেন, তারা অপুষ্টিতে মারা গেলেন।
কিন্তু টাইপ টু ডায়বেটিক যারা ছিলেন, তাদের মধ্যে বিস্ময়কর পরিবর্তন দেখা দিল। অনেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করলেন বছর দুই পরে, এবং সেসময়ে এটা ছিল ম্যাজিকের চেয়েও বেশি কিছু,(আজও বেশিরভাগের ক্ষেত্রে তাই আছে)।
ইনসুলিন আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত, ড. জসলিন দেখিয়েছিলেন, ডায়েট এবং লাইফস্টাইল চেঞ্জ করে বেশিরভাগ টাইপ টু ডায়বেটিক প্যাশেন্টই ভাল থাকতে পারেন।