রক্তে অতিরিক্ত সুগার থাকলে করনীয়
খাই কম, তাও রক্তে এত সুগার কোত্থেকে আসে, এই প্রশ্ন কোটি কোটি ডায়বেটিক রোগীর।
খুব পরিচিত একটা সমস্যা, ডায়বেটিক হওয়ার আগে দেখা যেত মোটামুটি স্বাভাবিক খাবার খেয়েও সুগার নরমাল থাকতো, কিন্তু ডায়বেটিস হওয়ার কিছুদিন আগে থেকে এবং ডায়বেটিস হওয়ার পর, খাওয়া কমিয়ে দিয়েও সুগার কন্ট্রোলে থাকছে না।
এটার পেছনে মূলত দায়ী লিভার ও কিডনির ওপর ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের প্রভাব। আমরা যখন ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্ট হয়ে যাই, তখন আমাদের লিভার ও কিডনি প্রোটিন ও ফ্যাট থেকে ধারাবাহিকভাবে গ্লুকোজ তৈরি করে। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে এই গ্লুকোজ উৎপাদনও বাড়তে থাকে।
তার মানে, আপনি কম খেলেও শরীর নিজ থেকেই গ্লুকোজ তৈরি করতে থাকবে।
আমাদের রক্তে গ্লুকোজ বেশি থাকলে অগ্ন্যাশয় বা প্যানক্রিয়াস থেকে ইনসুলিনও বেশি নিঃসৃত হয়(টাইপ ২ তে)। এই বাড়তি ইনসুলিন যখন আমাদের লিভারে পৌছায়, তখন লিভার নিজে থেকে গ্লুকোজ তৈরি বন্ধ করে দেয়।
কিন্তু ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্ট যারা, তাদের লিভার কোষগুলো ইনসুলিনের প্রতি স্বাভাবিক সংবেদনশীলতা হারিয়ে ফেলে। এই ধরনের অবস্থা কিডনিতেও তৈরি হতে পারে। ফলে একদিকে যেমন লিভার বাড়তি গ্লুকোজ বন্ধের জন্য দরকারী সিগন্যাল পায় না তেমনি কিডনিও বাড়তি সুগার তৈরি করতে থাকে।
আবার, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের কারনে সেই সুগারই রক্তে এসে ঘোরাফেরা করে কিন্তু লিভারে পৌছায় না, কারন আপনার লিভার অলরেডি গ্লুকোজ-ইনসুলিন দিয়ে ভরপুর হয়ে আছে, সে আর নিতে পারছে না।
এই অবস্থা থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে মাইক্রোমিনারেল থেরাপি এবং থেরাপিউটিক ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। সাধারনত ম্যাগনেসিয়াম, ক্রোমিয়াম ও বি ভিটামিন্স এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে যদি ৪-৬ মাস সঠিকভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়।
ডায়বেটিসকে নিয়ন্ত্রনে আনতে হলে তাই যুদ্ধটা শুধু গ্লুকোজের বিরুদ্ধে না, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের বিরুদ্ধেও।