ডায়াবেটিস নিয়েও মাসল বিল্ডিং করুন
আপনার যদি ডায়বেটিস থাকে এবং যদি খুব বাজে রকম শারীরিক দুর্বলতা/কো মরবিডিটি বা ইনজুরি না থাকে, আপনার অবশ্যই মাসল বিল্ডিং করা উচিত।
কেন বললাম কথাটা বুঝিয়ে বলি।
আপনার যদি শক্তিশালী ভলান্টারি মাসল থাকে, সম্ভাবনা খুবই বেশি যে আপনি আগের চেয়ে ৩০-৫০% বেশি গ্লুকোজ শরীরে জমাতে পারবেন। আমাদের শরীর গ্লুকোজকে জমানোর জন্য রক্তের গ্লুকোজ টেনে নিয়ে গ্লাইকোজেন বানায়(গ্লাইকোজেনেসিস কিভাবে হয় এই বায়োকেমিস্ট্রি ক্লাস নেয়া আমার পোস্টের উদ্দেশ্য না)। গ্লাইকোজেন দুইটা জায়গাতে জমে, এক হল, লিভার, দুই, মাসল।
আপনার মাসল মাস কম থাকলে শরীরের গ্লুকোজ জমানোর ক্ষমতা কমবে ফলে সহজেই গ্লুকোজ রক্তে চলে আসবে।
মেয়ে রোগীরা এজন্য অল্প চিনি খেলেই রক্ত্র গ্লুকোজ চলে আসে কারন তার মাসল মাস কম। ইভেন, পুরুষদের মধ্যে অনেক ভারী, শক্ত শরীর যাদের তাদের সাধারনত মাসলে গ্লুকোজ স্টোরেজ বেশি হওয়ার কারনে দুই একটা মিষ্টি খেলেও সুগার নরমাল থেকে যায়, যা নিয়ে বাকিরা অবাক হন, ঘটনা কি?? ও আমার চেয়ে মোটা তবু ওর কিছু হয় না কেন!
আসলে, ক্ষতি সবারই হয়, কেউ কেউ মাসল বেশি থাকার বা জিনেটিক্স ভালো থাকার এডভান্টেজ পায় আর কি।
তার মানে দেখা গেল, গ্লুকোজ সহ্য করার ক্ষমতা বাড়াতে হলে মাসল বাড়াতে হবে।
প্রথমে পারবেন না, কষ্ট হবে। আমাদের কালচার এর জন্য দায়ী। খেলাধুলা, ব্যায়াম এগুলা আমাদের কাছে সময় নষ্ট।
চারটা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করতে পারেন যাদের ইনজুরি নেই, তারা। বেস্ট হচ্ছে কোন ফিজিয়াট্রিস্ট বা ফিটনেস কোচের অধীনে শুরু করলে। যদি তা সম্ভব না হয়, এইগুলো থেকে শুরু করবেন।
১) লাঞ্জেস-রিভার্স লাঞ্জেস দেবেন, ১০টা থেকে শুরু করে ৩০ টায় যাবেন প্রতি সেটে। সপ্তাহে ১০টা করে রেপ বাড়াতে ট্রাই করবেন, ধীরে ধীরে সেট সংখ্যা বাড়াবেন।
২) ওয়াল পুশ আপ থেকে শুরু করবেন। প্রথমে ১০টা থেকে ধীরে ধীরে এক সেটে ৪০ টায় যাবেন। ৪০ টায় চলে গেলে ওয়াল পুশ আপের বদলে ইনক্লাইন পুশ আপ, এরপর নী পুশ আপ। যখন সেটাও পেরে যাবেন, তখন রেগুলার পুশ আপে আসবেন।
৩) স্কোয়াট ৩টা করে দিয়ে শুরু করবেন, এরপর দিনে ৫টা, ১০টা করে ধীরে ধীরে ২০টায় পৌছাবেন। এরপর সেট সংখ্যা বাড়ানো শুরু করতে হবে। যাদের ভিটামিন ডি লেভেলের অবস্থা খারাপ তাদের এটা করা উচিত না, ব্যথা পেতে পারেন।
৪) প্ল্যাঙ্ক-খুবই ভাল ব্যায়াম, ইনজুরির চান্স খুব কম। আস্তে আস্তে ৩০ সেকেন্ড থেকে শুরু করে ৪ সপ্তাহে ২ মিনিটে চলে যান।
এগুলো একদম বেইসিক। বেইসিক মাসল বিল্ডিং শুরু করে যে টার্গেটে যেতে বলেছি সেখানে যদি যেতে পারেন, এরপর নেক্সট লেভেল। এই জায়গায় এসে আপনি জিমে যেতে পারেন, বা ফিটনেস কোচের সাথেও কথা বলতে পারেন।
আর ভাল বি ভিটামিন, জিংক নিতে ভুলবেন না ব্যায়ামের আগে। এই ব্যাপারে প্রফেশনালের পরামর্শ নেয়াই ভাল হবে যেহেতু একেকজনের শারীরিক অবস্থা একেক রকম। তবে এরিস্টোভিট বি বা লাইফ এক্সটেনশনের বায়ো এক্টিভ বি ভিটামিন(যাদের বাজেট ভালো আছে) যে কেউই খেতে পারেন।
মাসল বিল্ডিং ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন যেমন সহজ করবে তেমনি বাড়াবে আত্মবিশ্বাসও।